
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন চর, দ্বীপচর ও নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী ১৩ টি এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে, তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত উপড়ে গেছে ফলজ, বনজসহ বিভিন্ন ধরনের মূল্যবান বৃক্ষ।
এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় আগাম বন্যার আশংকা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, গতকাল ২ জুন সোমবার তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তিস্তার পানি কিছুটা কম থাকলেও আজ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ সারাদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধরলা, দুধকুমোর ব্রক্ষপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙা এবং উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের বেশির ভাগ চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বাদাম, মরিচ, পাটসহ রবি শস্য। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষজন।
রাজারহাট উপজেলার চর বিদ্যানন্দ গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, চরে দুই একর জমিতে বাদাম চাষ করেছি
পানি বাড়ায় সেই ক্ষেত তলিয়ে গেছে। টানাবৃষ্টির কারণে সদ্যকেটে আনা ধান শুকাতে না পেরে বেশিরভাগ কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে। জেলা শহরের মোগলবাসা ইউনিয়নের ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার কৃষক আঃ রহিম, ফজল মিয়া, তাইজুদ্দিন দুঃখ করে বলেন, যে ২/১ বিঘা জমিতে ধান গাড়ছিলোং তলে গেইছে। পানিত ডুবি কিছু কাটি আনছি উষাছি কিন্তু শুকপ্যার না পায়া পোয়াল, ধান সউগে পঁচি গেইছে। এবার বড়বান হইবে বলে তারাও আশংকা প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে উলিপুরের হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জের সবকটি চর ও দ্বীপচর পানির নীচে তলিয়ে গেছে, ওই সমস্ত চরাঞ্চলের
সমস্ত বাদামের ক্ষেত পানিতে ডুবে
গেছে। মেকুরের আলগার ফরহাদ হোসেন, দইখাওয়া চরের আইয়ুব আলি, বিন্দুর চরের আঃ সাত্তার মিয়া দুঃখ করে জানান, চরাঞ্চল গুলোতে
আবহাওয়া সতর্কবার্তা অগাম জানা ও তার গুরুত্ব দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, আগামী দু’দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতলে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, ধারনা করা হচ্ছে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে না। এছাড়া পানি বৃদ্ধির ফলে যে ১৩টি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। যে কোন ধরণের বিপদাপন্নতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা রয়েছে।