০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষেতলালে প্রতিবন্ধী জয়নালের নদীতে পড়ে গিয়ে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার

মৃগী রোগী ও প্রতিবন্ধী যুবক জয়নাল আবেদিন  ভ্যান থেকে ভরা নদীতে পড়ে স্রোতের তোড়ে প্রায় ১২ কি:মি: ভেসে গিয়েও বেঁচে ফিরে অবাক করে দিয়েছে।  তিনি ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ভাসিলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।
সোমবার (২ জুন) সকাল ১১ টায় জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর বিলের ঘাট ব্রীজের উপর থেকে নদীতে পরে  নিখোঁজের পর ১২ কি:মি: ভেসে গিয়ে সাত ঘন্টা পর আক্কেলপুর উপজেলায় গিয়ে জীবিত উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
 জানাগেছে, বাবা মৃত্যুর পর বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন জয়নাল। গত চার বছর আগে গাছে উঠতে গিয়ে পরে কোমরের মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায় তার। অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারায় কোমরের নিচ থেকে অবস হয়ে পুঙ্গত্ব বরন করেন তিনি। উপজেলার প্রাসাশনের সহায়তায় বিদ্যুৎ চালিত অটো ভ্যানই তার চলাচলের একমাত্র বাহন। মৃগী রোগে আক্রান্ত জয়নাল ওই বাহনে শোয়া অবস্থায় চালিয়ে বিভিন হাটে বাজারে ভিক্ষাবৃত্তি করে বৃদ্ধ মা ও তার জীবিকা চালাতো।  তার নিজস্ব কোন ঘরও ছিলনা জয়নাল ও তার মার।  সোমবার সকাল ৮ টায় ভ্যান নিয়ে ভিক্ষা করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন তিনি।  উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর বিলের ঘাট ব্রীজের উপর পৌঁছালে হঠাৎ মৃগী রোগের উপসর্গ শুরু হয় এবং অসুস্থ অবস্থায় ব্রিজ থেকে নদীতে পরে গিয়ে নিখোঁজ হয় জয়নাল।
কিছুক্ষণ পরে নদীর বিভিন্ন বাঁকে স্থনীয়রা মৃত লাশ ভেসে যাওয়ার গুঞ্জন উঠে। ভ্যান চিনতে পেরে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পরে জয়নাল নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই দিন দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জ ঘাট এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত  ও ক্ষেতলাল থানার অফিসার্স ইনচার্জ সহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আক্কেলপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছে জানতে পারে  নিখোঁজ জয়নালকে নদী থেকে জীবিত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে স্থানীয়রা। সেখান থেকে ওই টিম সন্ধ্যা ৭ টায় জয়নালের ভাইয়ের বাড়ি ভাসিলা গ্রামে  গিয়ে নগদ অর্থ সহায়তা ও সরকারী বাড়ি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
জয়নালল আবেদিন জানায়, সকালে বাড়ি থেকে  বের হয়ে বিলের ঘাট ব্রিজে উঠলে আমার মৃগী রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর কি হয়েছে আমি জানি না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত,  অফিসার  ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওবায়দুল হক সহ ক্ষেতলাল উপজেলা ফায়ার সার্ভিস টিম সহ ক্ষেতলাল প্রেসক্লাবের  সাংবাদিকবৃন্দ  ।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

জুড়ীতে নিসচা’র সড়ক সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

ক্ষেতলালে প্রতিবন্ধী জয়নালের নদীতে পড়ে গিয়ে অলৌকিকভাবে জীবিত উদ্ধার

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৫৭:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
মৃগী রোগী ও প্রতিবন্ধী যুবক জয়নাল আবেদিন  ভ্যান থেকে ভরা নদীতে পড়ে স্রোতের তোড়ে প্রায় ১২ কি:মি: ভেসে গিয়েও বেঁচে ফিরে অবাক করে দিয়েছে।  তিনি ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ভাসিলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।
সোমবার (২ জুন) সকাল ১১ টায় জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর বিলের ঘাট ব্রীজের উপর থেকে নদীতে পরে  নিখোঁজের পর ১২ কি:মি: ভেসে গিয়ে সাত ঘন্টা পর আক্কেলপুর উপজেলায় গিয়ে জীবিত উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
 জানাগেছে, বাবা মৃত্যুর পর বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকতেন জয়নাল। গত চার বছর আগে গাছে উঠতে গিয়ে পরে কোমরের মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায় তার। অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে না পারায় কোমরের নিচ থেকে অবস হয়ে পুঙ্গত্ব বরন করেন তিনি। উপজেলার প্রাসাশনের সহায়তায় বিদ্যুৎ চালিত অটো ভ্যানই তার চলাচলের একমাত্র বাহন। মৃগী রোগে আক্রান্ত জয়নাল ওই বাহনে শোয়া অবস্থায় চালিয়ে বিভিন হাটে বাজারে ভিক্ষাবৃত্তি করে বৃদ্ধ মা ও তার জীবিকা চালাতো।  তার নিজস্ব কোন ঘরও ছিলনা জয়নাল ও তার মার।  সোমবার সকাল ৮ টায় ভ্যান নিয়ে ভিক্ষা করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন তিনি।  উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর বিলের ঘাট ব্রীজের উপর পৌঁছালে হঠাৎ মৃগী রোগের উপসর্গ শুরু হয় এবং অসুস্থ অবস্থায় ব্রিজ থেকে নদীতে পরে গিয়ে নিখোঁজ হয় জয়নাল।
কিছুক্ষণ পরে নদীর বিভিন্ন বাঁকে স্থনীয়রা মৃত লাশ ভেসে যাওয়ার গুঞ্জন উঠে। ভ্যান চিনতে পেরে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পরে জয়নাল নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই দিন দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী আক্কেলপুর উপজেলার নবাবগঞ্জ ঘাট এলাকা থেকে তাকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত  ও ক্ষেতলাল থানার অফিসার্স ইনচার্জ সহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আক্কেলপুর এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছে জানতে পারে  নিখোঁজ জয়নালকে নদী থেকে জীবিত উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে স্থানীয়রা। সেখান থেকে ওই টিম সন্ধ্যা ৭ টায় জয়নালের ভাইয়ের বাড়ি ভাসিলা গ্রামে  গিয়ে নগদ অর্থ সহায়তা ও সরকারী বাড়ি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
জয়নালল আবেদিন জানায়, সকালে বাড়ি থেকে  বের হয়ে বিলের ঘাট ব্রিজে উঠলে আমার মৃগী রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর কি হয়েছে আমি জানি না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত,  অফিসার  ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওবায়দুল হক সহ ক্ষেতলাল উপজেলা ফায়ার সার্ভিস টিম সহ ক্ষেতলাল প্রেসক্লাবের  সাংবাদিকবৃন্দ  ।