
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের আজমাতা গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। জমির মালিকানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায় যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজমাতা গ্রামের মৃত ওমর আলী ১৯৬৯ সালের ৮ নভেম্বর মো. জয়েন উদ্দিনের (৭০) কাছ থেকে ৬৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। দলিল নম্বর ১৬৩৫৮ অনুযায়ী, তিনি ওই জমির মালিকানা গ্রহণ করে দীর্ঘদিন ভোগদখল করেন এবং সেখানে তার পিতা, মাতা ও স্ত্রীর কবর দেন। কিন্তু ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বিক্রেতা জয়েন উদ্দিনের চার ছেলে—মফিজুল (৪৬), শহিদুল (৪২), সাইফুল (৪০) ও সাইদুল (৩৫)—হঠাৎ করে জমির মালিকানা দাবি করতে শুরু করেন। তারা ওমর আলীর দুই ছেলে, নজীর হোসেন (৫২) ও ফজলুল হককে (৪০) হুমকি দিতে থাকেন এবং তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালান। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিস বৈঠক আহ্বান করা হলে জয়েন উদ্দিন উপস্থিত না থাকলেও তার ছেলেরা দাবি করেন, ওমর আলীই নাকি তাদের পিতার কাছে জমি বিক্রি করেছিলেন। তারা দলিল নম্বর ১৬৩৫৬ উপস্থাপন করেন, যেখানে ৪৮ শতাংশ জমি ওমর আলীর নামে দেখানো হয়। তবে এটি অসংগতিপূর্ণ হওয়ায় সালিস বৈঠক ওমর আলীর সন্তানদের পক্ষেই রায় দেয়। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে নজীর হোসেন ও ফজলুল হক আদালতে ১৪৪ ধারা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। সহকারী ভূমি কমিশনার আশিক আহমেদ সরেজমিন তদন্ত করে ১৩ নভেম্বর ২০২৩ সালে ওমর আলীর ছেলেদের পক্ষেই রায় দেন এবং ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে জয়েন উদ্দিনের ছেলেরা হাইকোর্টের এফিলিয়েট ডিভিশনে আপিল করে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ (স্টে অর্ডার) আদায় করেন। কিন্তু ১ মার্চ ২০২৫ রাতের আঁধারে তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উক্ত জমিতে থাকা ৬০০ কলাগাছ কেটে ফেলে এবং দুটি চালাঘর নির্মাণ করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদটি প্রস্তুত হওয়ার সময় পর্যন্ত কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, তবে পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।