
ঈদুল আযহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফেরার জন্য রাজধানীমুখী মানুষের ঢল নেমেছে কুড়িগ্রামের চরাঞ্চল রাজিবপুরে। উপজেলার বটতলা বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকে রাত পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড় যাত্রীদের। তবে পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় বাধ্য হয়েই অনেকেই ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, সিএনজি ও অটোরিকশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ফিরছেন।
রাজিবপুরের চরাঞ্চল হওয়ার কারণে এখানকার বাসিন্দাদের জেলা শহর কিংবা রাজধানীতে যেতে হলে প্রথমে নৌকায় নদী পার হয়ে আসতে হয় বটতলা স্ট্যান্ডে। ঈদের ছুটির পরদিন থেকেই এই রুট ব্যবহার করে রংপুর, কুড়িগ্রাম, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, চিলমারী, উলিপুরসহ আশপাশের অনেক উপজেলার মানুষ ঢাকা ও অন্যান্য কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন। ফলে চর রাজিবপুরের বটতলা স্ট্যান্ড হয়ে উঠেছে এককথায় যাত্রাবিরতির কেন্দ্রবিন্দু।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, এই গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ডে নেই কোনো শৌচাগার বা ওয়াশরুম। নারী ও পুরুষ উভয় যাত্রীদেরকেই পড়তে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের জন্য এটি এক ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরমে অতিষ্ঠ যাত্রীদের বিশ্রাম বা পানির কোনো ব্যবস্থাও নেই।
একজন যাত্রী, আব্দুল হান্নান বলেন,
“এত বড় স্ট্যান্ড, অথচ টয়লেট নেই! পরিবার নিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়। ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য তো এটা আরও কষ্টকর।”
অন্যদিকে, গণপরিবহন সংকটের কারণে ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, সিএনজি ও অটো রিকশায় দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ঈদের পর থেকে যাত্রীচাপ বাড়ায় এই সব যানবাহনের চালকরা ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হাই সরকার, জানান,
“বছরের প্রতিটা ঈদ ও ছুটিতে এখান দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এখানকার অবস্থা একই—নো শৌচাগার, নো ছাউনিঘর, নো বিশ্রামের ব্যবস্থা। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি—এই স্ট্যান্ডে দ্রুত টয়লেট, পানির ব্যবস্থা ও ছাউনিসহ যাত্রীবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
উপজেলা প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হবে।”
জনসাধারণের দাবী, বটতলা বাসস্ট্যান্ডটি শুধু রাজিবপুরবাসীর নয়, পুরো উত্তরাঞ্চলের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। তাই এখানে স্থায়ীভাবে একটি যাত্রীছাউনি, শৌচাগার ও বিশ্রামাগার তৈরি করে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।