
২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের কারনে একদফা থমকে গিয়েছিলো বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। নতুন করে মহামারী করোনা ভাইরাস ভয়ংকর রুপ নিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে দীর্ঘ সময় তাণ্ডব চালানোর পর অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছিল করোনাভাইরাস। কিন্তু ২০২৫ সালে এসে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে ভাইরাসটির নতুন ধরন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের কিছু দেশে নতুন একটি ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। নতুন ধরনটির সংক্রমণ ক্ষমতা বেশি হলেও, মৃত্যুহার তুলনামূলক কম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোভিড-১৯ এখন আর অতিমারির পর্যায়ে না থাকলেও এটি একটি স্থায়ী জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে দেশগুলোকে সতর্কতা অবলম্বন এবং প্রস্তুতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি
বাংলাদেশেও মাঝে মাঝে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছাকাছি। যদিও সংক্রমণের হার আগের মতো নয়, তবুও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সতর্ক রয়েছে।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা ইউনিটগুলো রাখা হয়েছে সক্রিয়। বিভিন্ন পর্যায়ে করোনা পরীক্ষাও চালু রয়েছে। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আপডেটেড ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।
নতুন ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা পদ্ধতি
নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবেলায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ওষুধ কোম্পানি—যেমন Pfizer, Moderna ও Sinopharm—তাদের ভ্যাকসিনগুলো হালনাগাদ করেছে। বাংলাদেশে আপডেটেড টিকার জরুরি অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। সরকার জনগণকে নতুন ডোজ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাধারণ জনগণকে এখনো সতর্ক থাকতে হবে। ভিড়পূর্ণ স্থানে মাস্ক পরা, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখা, এবং অসুস্থ হলে বিশ্রাম নেওয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শবনম আক্তার বলেন,
> “করোনা এখন অনেকটা মৌসুমি রোগের মতো হলেও অবহেলা করলে বিপদ হতে পারে। মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং টিকা নেওয়াই এখনো আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা।
২০২৫ সালে এসে করোনাভাইরাস অতীতের মতো বিপজ্জনক না হলেও এটি এখনও হারিয়ে যায়নি। বৈশ্বিক প্রস্তুতি ও জনসচেতনতাই ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করছে। সচেতনতা, বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই মহামারি থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
—

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা (BBC, Reuters