০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবাদপত্রের কালো দিবস: আর কতদিন এই বোঝা বয়ে বেড়াবো

১৬ জুন, সংবাদপত্রের কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনটি বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে এক গাঢ় কলঙ্কের দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাকশাল সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়, কেবলমাত্র চারটি সরকারি প্রচারপত্রকে প্রকাশনার অনুমতি দেওয়া হয়। এর ফলে রাতারাতি বেকার হয়ে পড়েন হাজার হাজার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। স্তব্ধ হয়ে যায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকার।
১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ এ দিনটিকে ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে—যাতে আমরা ভুলে না যাই, কীভাবে এক রাতে জাতির বাকস্বাধীনতাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল।
এ উপলক্ষে আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) উদ্যোগে আয়োজিত হয় আলোচনা সভা। প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি এবং সঞ্চালনা করেন দৈনিক দিনকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল। বক্তব্য রাখেন মুস্তফা নঈম, মাহবুবুর রহমান, সালেহ নোমান, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, কামরুল হুদা, ওয়াহিদ জামান, সোহাগ কুমার বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, ইমরান এমি, জালাল উদ্দীন সাগর, জাহেদ তালুকদার প্রমুখ।
এ দিনটির গুরুত্ব কেবল ইতিহাস স্মরণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আমাদের সামনে একটি প্রশ্নও তুলে ধরে:
“আর কতদিন এই বোঝা বয়ে বেড়াবো?”
এই বোঝা হচ্ছে লজ্জার, অন্যায়ের, এবং দায়িত্বহীনতার—যা একটি স্বাধীন জাতির কণ্ঠরোধের ইতিহাস বহন করে। যতদিন না আমরা সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি, ততদিন এই ইতিহাস আমাদের স্মরণ করিয়ে যাবে আমাদের ব্যর্থতা ও দায়।
আজকের দিনটি তাই শুধুই শোকের নয়, প্রতিজ্ঞারও—যাতে আর কখনো কোনো স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত স্বাধীনতার উপর ছায়া ফেলতে না পারে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন গঠিত

সংবাদপত্রের কালো দিবস: আর কতদিন এই বোঝা বয়ে বেড়াবো

পোস্ট হয়েছেঃ ০৩:৫৬:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
১৬ জুন, সংবাদপত্রের কালো দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনটি বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে এক গাঢ় কলঙ্কের দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাকশাল সরকার গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়, কেবলমাত্র চারটি সরকারি প্রচারপত্রকে প্রকাশনার অনুমতি দেওয়া হয়। এর ফলে রাতারাতি বেকার হয়ে পড়েন হাজার হাজার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। স্তব্ধ হয়ে যায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অধিকার।
১৯৭৬ সাল থেকে সাংবাদিক সমাজ এ দিনটিকে ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে—যাতে আমরা ভুলে না যাই, কীভাবে এক রাতে জাতির বাকস্বাধীনতাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল।
এ উপলক্ষে আজ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) উদ্যোগে আয়োজিত হয় আলোচনা সভা। প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি এবং সঞ্চালনা করেন দৈনিক দিনকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল। বক্তব্য রাখেন মুস্তফা নঈম, মাহবুবুর রহমান, সালেহ নোমান, মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, কামরুল হুদা, ওয়াহিদ জামান, সোহাগ কুমার বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, ইমরান এমি, জালাল উদ্দীন সাগর, জাহেদ তালুকদার প্রমুখ।
এ দিনটির গুরুত্ব কেবল ইতিহাস স্মরণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আমাদের সামনে একটি প্রশ্নও তুলে ধরে:
“আর কতদিন এই বোঝা বয়ে বেড়াবো?”
এই বোঝা হচ্ছে লজ্জার, অন্যায়ের, এবং দায়িত্বহীনতার—যা একটি স্বাধীন জাতির কণ্ঠরোধের ইতিহাস বহন করে। যতদিন না আমরা সত্যিকার অর্থে স্বাধীন ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি, ততদিন এই ইতিহাস আমাদের স্মরণ করিয়ে যাবে আমাদের ব্যর্থতা ও দায়।
আজকের দিনটি তাই শুধুই শোকের নয়, প্রতিজ্ঞারও—যাতে আর কখনো কোনো স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত স্বাধীনতার উপর ছায়া ফেলতে না পারে।