
বরিশালের বাকেরগঞ্জে ছয় সন্তানের জননীর মৃত্যুর পর দাফন হল প্রতিবেশীর বাড়িতে, মায়ের লাশ দেখতেও আসেনি তার ছোট ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক মসজিদ ইমাম ফিরোজ আলম। আর এই হৃদয়বিদারক এক ঘটনার জন্ম হয়েছে বাকেরগঞ্জ পৌর সভার ৮ নং ওয়ার্ডে।
উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদিস গ্রামের আব্দুল মান্নান হাওলাদারের স্ত্রী মৃত রাবেয়া বেগম। নদী ভাঙ্গনে আব্দুল মান্নান হাওলাদার কলসকাঠী গ্রামের বাড়িটি হারিয়ে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের রুনশি এলাকায় জমি ক্রয় করে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। আর সেই বাড়িতেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
আব্দুল মান্নান হাওলাদারের বড় কন্যা রিনা বেগম জানান, আমার ছোট ভাই ফিরোজ আলম দুমকি উপজেলার চর গরবদী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমামতি করেন। গত ২০ বছর আগে মাদ্রাসা শিক্ষক ফিরোজ আলম সহজ সরল বাবার কাছ থেকে বাড়িসহ সব সম্পত্তির দলিল লিখে নেয়। এরপর ওই বাড়ি থেকে ভাই মা ও বোনদের তাড়িয়ে দেয়। এরপর অন্যান্য ভাই-বোনরা ভূমিহীন হয়ে পড়ে। অনেকে এখন বসবাস করছেন আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে।আমাদের অন্যান্য ভাই-বোনদের নিজস্ব কোন সম্পত্তি নাই। এ নিয়ে ফিরোজ আলমের বিরুদ্ধে আমরা একাধিক মামলাও করেছি। এরপর থেকে মা আমার কাছেই থাকতেন। তাই মায়ের মৃত্যুর পরে ফিরোজ আলম মাকে দেখতে আসেনি। মা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গত ১১জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরে আমার ভাই ফিরোজ মায়ের লাশ দেখতে আসেননি। একদিন পার হয়ে গেলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে এলাকার সহানুভূতিশীল প্রতিবেশী হায়দার ফকির মানবিক দিক বিবেচনায় তার নিজের জমিতে মায়ের দাফনের ব্যবস্থা করে দেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক মসজিদ ইমাম, ফিরোজ আলম জনকণ্ঠকে জানান, আমার ভাই বোনদের সাথে দীর্ঘদিন থেকে সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলে আসছে। মা তাদের কাছেই থাকতো। তাই ভয়ে মায়ের লাশ দেখতে যায়নি।