
বগুড়া জেলায় সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকতার নামে একটি অসুস্থ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে কথিত সাংবাদিক, যারা এই মহান পেশাটিকে ব্যবহার করছেন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে। নেই পর্যাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা, নেই সাংবাদিকতা বিষয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কিংবা সনদ। অথচ মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে বিভিন্ন অনলাইন বা অখ্যাত প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে।
এইসব কথিত সাংবাদিকরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ আবার নানা অজুহাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের সুবিধা আদায়ের চেষ্টাও করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এখানেই শেষ নয়—অনেকেই বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টিভি বা অন্য পেশাদার সাংবাদিকদের তৈরি করা সংবাদ, ছবি বা ভিডিও কপি করে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি বা ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করেন। এমনকি অনেক সময় অন্যের প্রতিবেদনকে নিজের নাম দিয়ে প্রচার করে ‘সাংবাদিক’ হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা চালিয়ে যান তারা।
এই ধরনের অপসাংবাদিকদের অনেকের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন থানায় প্রতারণা, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে প্রকৃত ও নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, এবং সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে প্রকৃত সংবাদ ও প্রহসনের মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি বন্ধ করতে হলে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর আরও কঠোর ভূমিকা গ্রহণ প্রয়োজন। একই সঙ্গে পাঠক ও দর্শকদের সচেতন হতে হবে, যাতে তারা ভুয়া সাংবাদিক ও ভুয়া সংবাদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন।