০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে হাতির আক্রমণে নিহত গৃহবধূর এতিম শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন

পর্যটন নগরী কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের জানারঘোনা এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে রিয়া মনি (১৯) নামের এক তরুণী মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত রিয়া মনির মৃত্যুর সংবাদে শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সদর উপজেলা প্রশাসন। পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিহত রিয়া মনির মাতৃহারা দেড় বছরের শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন। সদরের জানারঘোনা ফুটখালি জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রিয়া মনি একজন অটোরিকশা চালকের স্ত্রী। রিয়া মনি তার ১৪ মাস বয়সী শিশুকন্যাসহ স্বামীর সঙ্গে বনবিভাগের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছিলেন। জানারঘোনা এলাকার এই অংশটি মূলত পাহাড় ও বনঘেরা, যেখানে বহু পরিবার আজও অনিরাপদভাবে বসবাস করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯ জুন ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার দিকে রিয়া মনি পাশের খালার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি দলছুট বন্য হাতি হঠাৎ তার পথরোধ করে আক্রমণ করে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রিয়া মনির এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরদিন ২০ জুন (শনিবার) সকালে নিহতের মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে বাবার বাড়িতে নেওয়া হলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরেজমিনে সেখানে উপস্থিত হন। তার সঙ্গে ছিলেন ঝিলংঝা রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও বনবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা।তারা রিয়া মনির স্বজনদের সান্ত্বনা জানান, তার শিশু সন্তানের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহতের পরিবারের পাশে আছি এবং শিশু সন্তানের ভবিষ্যতের দিকটিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জানারঘোনা এলাকার সরকারি বনভূমিতে বহু ভুমিহীন অসহায় পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। বন্য হাতির বিচরণ ও হামলার ঘটনা এখানে নতুন নয়। তারা এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসন ও বন বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানান। এ বিষয়ে কক্সবাজার বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, হাতির চলাচলের রুটে কোনো স্থায়ী বসতি থাকলে তা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। এদিকে নিহত রিয়া মনির শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তার শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে তুলে নেয়ায় নেটিজনদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নড়াইল ডিবি কর্তৃক ২৬(ছাব্বিশ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার ০২

কক্সবাজারে হাতির আক্রমণে নিহত গৃহবধূর এতিম শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:১৮:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
পর্যটন নগরী কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের জানারঘোনা এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে রিয়া মনি (১৯) নামের এক তরুণী মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত রিয়া মনির মৃত্যুর সংবাদে শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সদর উপজেলা প্রশাসন। পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিহত রিয়া মনির মাতৃহারা দেড় বছরের শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন। সদরের জানারঘোনা ফুটখালি জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা রিয়া মনি একজন অটোরিকশা চালকের স্ত্রী। রিয়া মনি তার ১৪ মাস বয়সী শিশুকন্যাসহ স্বামীর সঙ্গে বনবিভাগের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছিলেন। জানারঘোনা এলাকার এই অংশটি মূলত পাহাড় ও বনঘেরা, যেখানে বহু পরিবার আজও অনিরাপদভাবে বসবাস করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৯ জুন ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার দিকে রিয়া মনি পাশের খালার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এসময় একটি দলছুট বন্য হাতি হঠাৎ তার পথরোধ করে আক্রমণ করে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রিয়া মনির এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরদিন ২০ জুন (শনিবার) সকালে নিহতের মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে বাবার বাড়িতে নেওয়া হলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরেজমিনে সেখানে উপস্থিত হন। তার সঙ্গে ছিলেন ঝিলংঝা রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও বনবিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা।তারা রিয়া মনির স্বজনদের সান্ত্বনা জানান, তার শিশু সন্তানের খোঁজখবর নেন এবং পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা নিহতের পরিবারের পাশে আছি এবং শিশু সন্তানের ভবিষ্যতের দিকটিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জানারঘোনা এলাকার সরকারি বনভূমিতে বহু ভুমিহীন অসহায় পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। বন্য হাতির বিচরণ ও হামলার ঘটনা এখানে নতুন নয়। তারা এ ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসন ও বন বিভাগের প্রতি জোর দাবি জানান। এ বিষয়ে কক্সবাজার বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, হাতির চলাচলের রুটে কোনো স্থায়ী বসতি থাকলে তা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। এদিকে নিহত রিয়া মনির শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তার শিশুকে মাতৃস্নেহে কুলে তুলে নেয়ায় নেটিজনদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন।