
পরিবারের অস্বচ্ছলতা কাটাতে ৭ বছর পূর্বে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ ইরাকে পাড়ি জমিয়েছেন ভোলার কিশোর মোঃ আলী। অবশেষে ভাগ্য বদলের আগেই কর্মস্থলে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন মোঃ আলী। নিহত আলী ভোলা সদর উপজেলা বাপ্তা ৩নং ওয়ার্ডের মুয়াজ্জিন হাফেজ সালেহ আহমেদ ৭ সন্তানের ৬ষ্ঠ তম সন্তান।
জানা গেছে, হাফেজ সালেহ আহমেদ ও নাজমা দম্পতির ৫ কন্যার পর এ দম্পতির আদরের ধন মোঃ আলী। বাবা মসজিদের মুয়াজ্জিন। জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস। অভাবের সংসার তাই প্রবাসে থাকা মামা ফরিদের সহযোগিতায় পাড়ি জমান প্রবাসে। ভালই কেটছিল প্রবাস জীবন। গত ৭ মাস পূর্বে দেশে এসেছেন মোঃ আলী। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের চাঁপ দিলেও একটি পাকা ঘর করে দ্বিতীয় বার এসে বিয়ে করবেন বলে জানিয়েছেন আলী। অবশেষে ঘর হলো, কিন্তু বিয়ে করে সে ঘরে আর উঠা হলো না স্বপ্নরাজ এ প্রবাসীর। নিজের স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন হলো না তার। পবিারের সবাইকে কাঁদিয়ে অল্প বয়সেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
মোঃ আলীর মামা মোঃ ফরিদ বলেন, আমার ভাগিনাকে আমি প্রবাসে নিয়েছি। সে বাগদাদ শহরে একটি মালিকানাধীন বাসায় জেনারেটর এর কাজ করতেন। গত শনিবার রাতে জেনারেটর বিস্ফোরণ হয়। এ সময় দৌড়ে গিয়ে আলী লাইন বন্ধ করতে যায়। তখন গরম তেল এসে তার গায়ে পরে শরীরের ৯৮ ভাগ দগ্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মধ্য রাতে মৃত্যুবরণ করে আলী।
মৃত আলীর বোন ইয়াসমিন বলেন, ভাগ্য বদলের জন্য ভাই প্রবাসে গেছে। যখন মোটামুটি ভাগ্য ফিরিয়ে আনার জায়গায় নিয়ে এসেছে তখনই আল্লাহ আমার ভাইকে নিয়ে গেছে। ছেলের মৃত্যুর খবরে স্বজন, এলাকাবাসী বাড়ীতে ভীর জমাচ্ছেন। আর ছেলের বয়সীদের দেখলেই আলী-আলী বলে বার বার জ্ঞান হারান অসুস্থ্য বাবা ও বৃদ্ধা মা।
নিহতের ছোট ভাই মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ চলমান থাকায় আমার ভাইকে মনে হয় দেশে আনা হবে না। তবে আমরা বলেছি আমার ভাইকে যেন ইরাকে হযরত আলী (রা:) এর মাজারের পাশে দাফন করার ব্যবস্থা করা হয়।