
কুড়িগ্রামে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের ভুমিকা- শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ জুন সোমবার সকাল ১০ টায় প্রকল্পের উপ-পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের অধীন বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয় করণ( তয় পর্যায়) প্রকল্পের আয়োজনে সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক জনাব নুসরাত সুলতানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( সার্বিক) কুদরত-ই- খুদা, সহকারী কমিশনার জনাব মেজবাহ উদ্দিন, কুড়িগ্রাম জেলা সমাজ সেবার উপ- পরিচালক হুমায়ুন কবির, এনজিও প্রতিষ্ঠান সলিডারিটি কুড়িগ্রামের নির্বাহী পরিচালক হারুন অর রশীদ, অন্যদের মধ্যে জেলা তথ্য অফিসার শাহজাহান আলী, প্রকল্প বাস্তবায়ন এনজিও প্রতিষ্ঠান ইএসডিও- এর প্রজেক্ট ম্যানেজার গোলাম ফারুক,
এএফএডি নির্বাহী প্রধান সাইদা ইয়াসমীন, মুসলিম এইডের এডুকেশন কো অর্ডিনেটর শাহ ওয়ালিউল্লাহ, আরডিআরএস- বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম ইউনিটের টিম লিডার তপন কুমার সাহা, দৈনিক আজকের খবর কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি আহম্মেদুল কবির, দৈনিক কালবেলার জেলা প্রতিনিধি সাইদ আহমেদ বাবু, একুশে টিভির প্রতিনিধি আতাউর রহমান বিপ্লব, নাগরিক টিভির ফজলুল করীম ফারাজি দেশ টিভির প্রতিনিধি জুয়েল রানাসহ বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় উপস্থিতিগন গ্রাম আদালত প্রকল্পের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরে প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে তৃণমূলে কাজ করার বিভিন্ন কর্মপন্থা সুবিধা অসুবিধা সম্ভাবনা এবং আগামিতে এর ভুমিকা ও সৌন্দর্য তুলে ধরে অব্যাহত প্রচারাভিযান মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানো গেলে প্রকল্পের সাফল্য আসবে বলে মতবিনিময় করেন।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক জনাব নুসরাত সুলতানা তার বক্ত্যবে বলেন, সরকার যেহেতু গ্রাম আদালতকে গুরুত্ব দিচ্ছে এর মূল্যায়ন করতে হবে। গ্রাম আদালতে
মানুষজন গেলে ন্যায় বিচার পাবে।
সময় লাগবে কম। হয়রানির হাত থেকে বাচতে পারবে। ইউনিয়ন পরিষদকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে
যেহেতু গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হবে এজন্য সর্ব প্রথম সৎ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে হবে। ১৬ নদী বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলার প্রায় সাড়ে ৪ শত চরাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের আইনী সুধিধার কথা বলতে গিয়ে বলেন, মানুষের আইনীসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য গ্রাম আদালত কত সুন্দর ভুমিকা রাখতে পারে সেটি তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বোর্ড স্কুলের
উদাহরন তুলে ধরেন এবং বলেন, কুড়িগ্রাম একটি সুন্দরতম জেলা, আনেক রিসোর্স থাকা সত্ত্বেও যত্ন করা হয়নি। দেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে কুড়িগ্রাম ৬৪ তম। এর থেকে বেড়িয়ে উপরে আসতে হবে। অনেক জেলার মানুষ নিজ সন্তানের লেখাপড়ার জন্য বিদেশ যায়, সেখানে বাড়িগাড়ি করে বসবাস করে। শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের মানুষজন চর থেকে তাদের বিশেষ করে মেয়ে সন্তানদের শহরে লেখাপড়া করাতে পাঠাতে চায় না। অল্প বয়সেই বিয়ে দেয়। বাল্যবিয়ে বেড়েছে। ফলে দিনের পর দিন এ অঞ্চলে প্রতিবন্ধির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে এমন নানান অসংগতির জন্য বিভিন্ন ছোটবড় সামাজিক অপরাধও হয়ে থাকে। সেই সমস্ত অপরাধের ন্যায় বিচার আদালতে পেতে গিয়েও তাদের বহুবিধ বিড়ম্বনার স্বীকার হতে হয়। এজন্য সরকার তৃনমুল মানুষের ন্যায় বিচার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য উল্লেখিত প্রকল্পের মধ্যমে কাজ শুরু করেছে। এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোও করছে। আমরা সবাই যে যার সামাজিক অবস্থান থেকে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম গুলো তুলে ধরতে পারি, মানুষকে আরও বেশি সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে
আগামিতে ছোটখাটো বিচার চাইতে
আদালতে যেতে হবে না। এতে সাধারণ মানুষজন উপকৃত হবে।
উল্লেখ্য, উল্লেখিত প্রকল্পটি দেশের
৬১ জেলার ৪৬৮ ইউনিয়নে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ২৫ টি ইউনিয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এনজিও প্রতিষ্ঠান ইএসডিও প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।
কর্মশালাটি পরিচালনা করেন, ইএসডিও’ র উক্ত প্রকল্পের জেলা ম্যানেজার দৌলতুন্নেছা দোলা।