০৬:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজীপুর কোনাবাড়িতে নতুন আতঙ্ক: স্বেচ্ছাসেবক দল পদপ্রার্থী জারিফ আহমেদ অরণ্যের বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্য, মাদক ও চাঁদাবাজির ভয়াবহ অভিযোগ

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানা এলাকায় এক তরুণ রাজনৈতিক কর্মীকে ঘিরে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জারিফ আহমেদ অরণ্য, যিনি নিজেকে কোনাবাড়ী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ উঠছে, যা স্থানীয় রাজনীতির পরিবেশকে করেছে অস্থির।

🧾 অভিযোগ এক: পদ বাণিজ্যের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

স্থানীয় ও দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জারিফ আহমেদ অরণ্য ঈদের পূর্বে গোপনে রাজধানীর এক অভিজাত রেস্টুরেন্টে গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শাহিনের হাতে ৫ লক্ষ টাকা তুলে দেন। ওই টাকার বিনিময়ে তাকে ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদে নিয়োগের আশ্বাস দেওয়া হয়। দলীয় অভ্যন্তরে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ত্যাগী ও সিনিয়র নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং এটিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের জন্য লজ্জাজনক নজির বলে আখ্যা দিয়েছেন।

💊 অভিযোগ দুই: মাদক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ

অনুসন্ধান চালিয়ে আরও জানা গেছে, অরণ্য তার ঘনিষ্ঠ ছেলেপেলেদের মাধ্যমে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালান। সূত্র জানায়, ইয়াবা, গাঁজা এবং চোলাই মদ সরবরাহ ও খুচরা বিক্রয়ের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার সহযোগী হিসেবে ইয়াসিন নামের এক যুবকের নাম বিশেষভাবে উঠে এসেছে, যিনি মাদক সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। ইয়াসিনের পিতা একজন আওয়ামী লীগ কর্মী, বর্তমানে একাধিক মামলায় পলাতক রয়েছেন।

💰 অভিযোগ তিন: বাস কাউন্টার থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়

কোনাবাড়ির বিভিন্ন বাস কাউন্টার, যেমন নাবিল, গাজীপুর এক্সপ্রেস, হানিফসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন সার্ভিস থেকে অরণ্য ও তার অনুসারীরা নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাস চালক ও সহকারীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তবে ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

📢 জনমনে উদ্বেগ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের হতাশা

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের প্রশ্ন, যদি টাকা দিয়েই পদ অর্জন সম্ভব হয়, তবে যারা বছরের পর বছর ধরে নিরলসভাবে দলের জন্য কাজ করেছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, তাদের অবস্থান কোথায়?

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের মতে, এ ধরনের ব্যক্তি যদি দলে নেতৃত্বে আসে, তাহলে দলের আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তরুণ প্রজন্মের মাঝেও নেতিবাচক বার্তা যাবে।

🕵️‍♂️ পরবর্তী পদক্ষেপ ও অনুসন্ধান

এই ঘটনার সত্যতা যাচাই ও বিস্তারিত অনুসন্ধানে নামছে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক সংগঠন। ভবিষ্যতে জারিফ আহমেদ অরণ্য, শাহাদাত হোসেন শাহিন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সরাসরি বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে—মাদক, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।


📝 সম্পাদকীয় মন্তব্য:
রাজনীতি যেন ত্যাগ ও আদর্শের পথ হয়, অর্থ আর ভয়ভীতির মাধ্যমে না। একটি পদ অর্জনের পেছনে যদি টাকা ও অপরাধ জড়িত থাকে, তবে সেই নেতৃত্ব কখনো জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে না।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

মধ্যনগর বাজারে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি নজরদারি শুরু

গাজীপুর কোনাবাড়িতে নতুন আতঙ্ক: স্বেচ্ছাসেবক দল পদপ্রার্থী জারিফ আহমেদ অরণ্যের বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্য, মাদক ও চাঁদাবাজির ভয়াবহ অভিযোগ

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:২৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানা এলাকায় এক তরুণ রাজনৈতিক কর্মীকে ঘিরে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। জারিফ আহমেদ অরণ্য, যিনি নিজেকে কোনাবাড়ী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ উঠছে, যা স্থানীয় রাজনীতির পরিবেশকে করেছে অস্থির।

🧾 অভিযোগ এক: পদ বাণিজ্যের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ

স্থানীয় ও দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, জারিফ আহমেদ অরণ্য ঈদের পূর্বে গোপনে রাজধানীর এক অভিজাত রেস্টুরেন্টে গাজীপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শাহিনের হাতে ৫ লক্ষ টাকা তুলে দেন। ওই টাকার বিনিময়ে তাকে ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদে নিয়োগের আশ্বাস দেওয়া হয়। দলীয় অভ্যন্তরে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ত্যাগী ও সিনিয়র নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং এটিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের জন্য লজ্জাজনক নজির বলে আখ্যা দিয়েছেন।

💊 অভিযোগ দুই: মাদক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ

অনুসন্ধান চালিয়ে আরও জানা গেছে, অরণ্য তার ঘনিষ্ঠ ছেলেপেলেদের মাধ্যমে এলাকায় মাদক ব্যবসা চালান। সূত্র জানায়, ইয়াবা, গাঁজা এবং চোলাই মদ সরবরাহ ও খুচরা বিক্রয়ের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার সহযোগী হিসেবে ইয়াসিন নামের এক যুবকের নাম বিশেষভাবে উঠে এসেছে, যিনি মাদক সরবরাহে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। ইয়াসিনের পিতা একজন আওয়ামী লীগ কর্মী, বর্তমানে একাধিক মামলায় পলাতক রয়েছেন।

💰 অভিযোগ তিন: বাস কাউন্টার থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়

কোনাবাড়ির বিভিন্ন বাস কাউন্টার, যেমন নাবিল, গাজীপুর এক্সপ্রেস, হানিফসহ বেশ কয়েকটি পরিবহন সার্ভিস থেকে অরণ্য ও তার অনুসারীরা নিয়মিতভাবে চাঁদা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাস চালক ও সহকারীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তবে ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

📢 জনমনে উদ্বেগ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের হতাশা

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের প্রশ্ন, যদি টাকা দিয়েই পদ অর্জন সম্ভব হয়, তবে যারা বছরের পর বছর ধরে নিরলসভাবে দলের জন্য কাজ করেছেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন, তাদের অবস্থান কোথায়?

স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের মতে, এ ধরনের ব্যক্তি যদি দলে নেতৃত্বে আসে, তাহলে দলের আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তরুণ প্রজন্মের মাঝেও নেতিবাচক বার্তা যাবে।

🕵️‍♂️ পরবর্তী পদক্ষেপ ও অনুসন্ধান

এই ঘটনার সত্যতা যাচাই ও বিস্তারিত অনুসন্ধানে নামছে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক সংগঠন। ভবিষ্যতে জারিফ আহমেদ অরণ্য, শাহাদাত হোসেন শাহিন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সরাসরি বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ ছাড়া প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে—মাদক, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।


📝 সম্পাদকীয় মন্তব্য:
রাজনীতি যেন ত্যাগ ও আদর্শের পথ হয়, অর্থ আর ভয়ভীতির মাধ্যমে না। একটি পদ অর্জনের পেছনে যদি টাকা ও অপরাধ জড়িত থাকে, তবে সেই নেতৃত্ব কখনো জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারে না।