১১:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে লটকন চাষ দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে

  • অরবিন্দ রায়
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৪৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • 15

 নরসিংদীতে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ায় দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে লটকন চাষ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে লটকন এখন বিদেশে ও রপ্তানি হচ্ছে। নরসিংদীর অর্থনীতিতে লটকন গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নরসিংদীর বিখ্যাত মৌসুমি ফল পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক ( জিআই)  পন্যের গৌরবময় স্বীকৃতি। লটকন শুধু একটি ফলই নয়, এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ও কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জিআই পন্যের স্বীকৃতির ফলে স্হানীয় কৃষকেরা লটকন চাষে আরও উৎসাহিত হয়েছে । এতে স্হানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে লটকনের পরিচিত, চাহিদা বাড়ছে বলে আশা করা যায়।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে এক হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন লকটনের ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদিত এ লটকন বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা।
জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে প্রথম বেলাবো উপজেলার লাখপুর গ্রামে  লটকনের আবাদ শুরু হয়। এরপর থেকে বেলাব ও শিবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের লালমাটির এলাকায় লটকন চাষের প্রসার শুরু হয়। দিন দিন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ লটকনের চাহিদা বাজারে বাড়তে থাকে। এতে ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই লটকনের চাষাবাদ বাড়ছে।
নরসিংদীর   বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় গত ৩০ বছর ধরে  বাণিজ্যিকভাবে লটকনের প্রসার ঘটেছে। দুই উপজেলার প্রায় প্রতিটি পরিবারে লটকন অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে । লটকন চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর পাশাপাশি বেকার সমস্যা সমাধানের পথও খুঁজে পেয়েছেন অনেক  মানুষ।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শিবপুর ও বেলাবো উপজেলার লাল রঙের উঁচু মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া লটকন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া রায়পুরা, মনোহরদী  ও বেলাব  উপজেলার বেশ কিছু এলাকার মাটিও লটকন চাষের জন্য উপযোগী।
বেলাব গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসাইন জানান, লটকনের পুষ্টিগুন আগে মানুষ জানত না। লটকনের পুষ্টিগুন জানার পর লটকনের চাহিদা বেড়ে যায়। অনেকেই লটকন চাষ করে লাভবান হয়েছে। লালমাটিতে লটকন ভালো হয়। নরসিংদীর লটকন খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এর কদর বেড়েছে।
২০০৮ সাল থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লটকন  রফতানি হচ্ছে । মৌসুমী এ ফলের বাজার ঘিরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরার মরজাল ও শিবপুর উপজেলা সদরে বসছে লটকনের হাট। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারগণ এসে লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  রাজধানী ঢাকা থেকে এসব লটকন  বিদেশে রফতানি হচ্ছে।
শিবপুরের  লটকন কম খরচে অধিক লাভজনক ফসলের মধ্যে  অন্যতম। লটকনের  বাগান শুরু করতে প্রথমে খরচ বিঘাপ্রতি প্রায়  ১০ হাজার   খরচ হয়।  সে তুলনায় লাভ বেশি হয়।
শিবপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়,  লটকন চাষ বৃদ্ধিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চারা উৎপাদন করাসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। যার ফলে এর ফলন ভালো হয়।  নরসিংদীর লটকন  দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারে রফতানি  হচ্ছে। এতে কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। লটকন চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।

বেলাব গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসাইন জানান, লটকনের পুষ্টিগুন  আগে মানুষ জানত না। লটকনের পুষ্টিগুন জানার পর মানুষের মধ্যে লটকনের পুষ্টিগুন বেড়েছে। অনেকই লটকন চাষ করে লাভবান হয়েছে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

বাউফলে খেলাফত,মজলিসের২০২৫-এ পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে প্রার্থী ঘোষণা

নরসিংদীতে লটকন চাষ দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৪৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

 নরসিংদীতে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ায় দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে লটকন চাষ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে লটকন এখন বিদেশে ও রপ্তানি হচ্ছে। নরসিংদীর অর্থনীতিতে লটকন গুরুত্বপূর্ণ পূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নরসিংদীর বিখ্যাত মৌসুমি ফল পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক ( জিআই)  পন্যের গৌরবময় স্বীকৃতি। লটকন শুধু একটি ফলই নয়, এ অঞ্চলের ঐতিহ্য ও কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জিআই পন্যের স্বীকৃতির ফলে স্হানীয় কৃষকেরা লটকন চাষে আরও উৎসাহিত হয়েছে । এতে স্হানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে লটকনের পরিচিত, চাহিদা বাড়ছে বলে আশা করা যায়।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে এক হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন লকটনের ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদিত এ লটকন বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা।
জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে প্রথম বেলাবো উপজেলার লাখপুর গ্রামে  লটকনের আবাদ শুরু হয়। এরপর থেকে বেলাব ও শিবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের লালমাটির এলাকায় লটকন চাষের প্রসার শুরু হয়। দিন দিন মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে খাদ্য ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ লটকনের চাহিদা বাজারে বাড়তে থাকে। এতে ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই লটকনের চাষাবাদ বাড়ছে।
নরসিংদীর   বেলাব ও শিবপুর উপজেলায় গত ৩০ বছর ধরে  বাণিজ্যিকভাবে লটকনের প্রসার ঘটেছে। দুই উপজেলার প্রায় প্রতিটি পরিবারে লটকন অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে । লটকন চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর পাশাপাশি বেকার সমস্যা সমাধানের পথও খুঁজে পেয়েছেন অনেক  মানুষ।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শিবপুর ও বেলাবো উপজেলার লাল রঙের উঁচু মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এখানকার মাটি ও আবহাওয়া লটকন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া রায়পুরা, মনোহরদী  ও বেলাব  উপজেলার বেশ কিছু এলাকার মাটিও লটকন চাষের জন্য উপযোগী।
বেলাব গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসাইন জানান, লটকনের পুষ্টিগুন আগে মানুষ জানত না। লটকনের পুষ্টিগুন জানার পর লটকনের চাহিদা বেড়ে যায়। অনেকেই লটকন চাষ করে লাভবান হয়েছে। লালমাটিতে লটকন ভালো হয়। নরসিংদীর লটকন খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এর কদর বেড়েছে।
২০০৮ সাল থেকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে লটকন  রফতানি হচ্ছে । মৌসুমী এ ফলের বাজার ঘিরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রায়পুরার মরজাল ও শিবপুর উপজেলা সদরে বসছে লটকনের হাট। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারগণ এসে লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  রাজধানী ঢাকা থেকে এসব লটকন  বিদেশে রফতানি হচ্ছে।
শিবপুরের  লটকন কম খরচে অধিক লাভজনক ফসলের মধ্যে  অন্যতম। লটকনের  বাগান শুরু করতে প্রথমে খরচ বিঘাপ্রতি প্রায়  ১০ হাজার   খরচ হয়।  সে তুলনায় লাভ বেশি হয়।
শিবপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়,  লটকন চাষ বৃদ্ধিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চারা উৎপাদন করাসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। যার ফলে এর ফলন ভালো হয়।  নরসিংদীর লটকন  দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজারে রফতানি  হচ্ছে। এতে কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। লটকন চাষের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।

বেলাব গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসাইন জানান, লটকনের পুষ্টিগুন  আগে মানুষ জানত না। লটকনের পুষ্টিগুন জানার পর মানুষের মধ্যে লটকনের পুষ্টিগুন বেড়েছে। অনেকই লটকন চাষ করে লাভবান হয়েছে।