০১:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বপ্নের তিস্তা সেতুর উদ্বোধন হতে চলছে এ মাসের মধ্যেই

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে নির্মিত তিস্তা হরিপুর সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় দুই জেলার লাখো মানুষ।অপেক্ষার প্রহর আর যেন কোনোভাবেই কাটছে না। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ও দীর্ঘ সংগ্রাম আন্দোলন করে পাওয়া এই সেতুটি এ যেন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর চেয়েও  দামি একটি সেতু এই অঞ্চলের মানুষের কাছে। সেই ১৯৬২ সাল থেকে এই অঞ্চলে এই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছিল  এ অঞ্চলের মানুষ। এই একটি সেতু নির্মাণের জন্য কত হাহাকার কত ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এই অঞ্চলের মানুষদেরকে। এই একটি সেতুর অভাবে এই অঞ্চলের মানুষদেরকে  যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তা বলছিল ডাঙার চরের শাহ আলম নামের এক মুরুব্বি। তিনি বলেন চিকিৎসা সেবা স্বাস্থ্য সেবা লেখাপড়া  থেকে শুরু করে সকল বিষয়ে ভোগান্তির  শিকার হতে হয়েছে।তিনি আরও বলেন এই নদী একেক সময় একেক রূপ ধারণ করত যার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত নদীর আগ্রাসনের শিকার হতাম। জরুরী প্রয়োজনে আমরা কখনোই চিকিৎসা সেবা স্বাস্থ্য সেবা গর্ভবতী নারী এমনকি অসুস্থ মুমূর্ষ রোগীদেরকে  সঠিক সময় হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারতাম না। আমরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য কৃষি পণ্যর দাম সঠিকভাবে পাইতাম না কারণ আমরা সঠিক সময় সেগুলো  বাজারে নিয়ে যেতে পারতাম না। নদীর কারণে অনেক সময় দেখা গেছে এক নদী কিন্তু দুইবার নৌকা পরিবর্তন করতে হতো  সঠিকভাবে নৌকার যোগান ছিল না। এই এক নদী পার হতে সুন্দরগঞ্জ অংশে একবার ভাড়া দিতে হতো  আবার চিলমারী অংশে একবার ভাড়া দিতে হতো নৌকায়। যার ফলে আমাদের ডাবল টাকা ব্যায় হতো। এভাবেই ওই মুরুব্বী বিস্মিত  কন্ঠে বললেন আমাদের যে কত ভোগান্তি ছিল।  কত নদী বালুচর হেঁটে পার হয়ে যাওয়ার স্মৃতি আজ যেন সব স্বপ্নের মত  মনে হচ্ছে তিস্তা সেতুর বাস্তব রুপ দেখে। ওই মুরুব্বী কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন হামার তিস্তা সেতু হামার কাছে পদ্মা সেতুর চেয়েও দামি বাহে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। সেতুটিতে ২৯০টি পাইল ও ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সেতুর উভয়পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে নদী শাসনের কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রায় ১৩৩ একর জমি।এলজিইডি সূত্রে আরও জানা যায় সেতুটি এ মাসেই উদ্বোধন হবে বলে আশা করা যায়। সেতুটির প্রায় ৯৮% – ৯৯%  কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে হবে বলে ধারণা করা হয়।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সোহাগ হত্যার দায় তারেক জিয়াকে নিতে হবে। -মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করিম (শায়খে চরমোনাই)

স্বপ্নের তিস্তা সেতুর উদ্বোধন হতে চলছে এ মাসের মধ্যেই

পোস্ট হয়েছেঃ ১০:৪০:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে নির্মিত তিস্তা হরিপুর সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় দুই জেলার লাখো মানুষ।অপেক্ষার প্রহর আর যেন কোনোভাবেই কাটছে না। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ও দীর্ঘ সংগ্রাম আন্দোলন করে পাওয়া এই সেতুটি এ যেন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর চেয়েও  দামি একটি সেতু এই অঞ্চলের মানুষের কাছে। সেই ১৯৬২ সাল থেকে এই অঞ্চলে এই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছিল  এ অঞ্চলের মানুষ। এই একটি সেতু নির্মাণের জন্য কত হাহাকার কত ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এই অঞ্চলের মানুষদেরকে। এই একটি সেতুর অভাবে এই অঞ্চলের মানুষদেরকে  যে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তা বলছিল ডাঙার চরের শাহ আলম নামের এক মুরুব্বি। তিনি বলেন চিকিৎসা সেবা স্বাস্থ্য সেবা লেখাপড়া  থেকে শুরু করে সকল বিষয়ে ভোগান্তির  শিকার হতে হয়েছে।তিনি আরও বলেন এই নদী একেক সময় একেক রূপ ধারণ করত যার ফলে আমরা প্রতিনিয়ত নদীর আগ্রাসনের শিকার হতাম। জরুরী প্রয়োজনে আমরা কখনোই চিকিৎসা সেবা স্বাস্থ্য সেবা গর্ভবতী নারী এমনকি অসুস্থ মুমূর্ষ রোগীদেরকে  সঠিক সময় হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারতাম না। আমরা আমাদের উৎপাদিত পণ্য কৃষি পণ্যর দাম সঠিকভাবে পাইতাম না কারণ আমরা সঠিক সময় সেগুলো  বাজারে নিয়ে যেতে পারতাম না। নদীর কারণে অনেক সময় দেখা গেছে এক নদী কিন্তু দুইবার নৌকা পরিবর্তন করতে হতো  সঠিকভাবে নৌকার যোগান ছিল না। এই এক নদী পার হতে সুন্দরগঞ্জ অংশে একবার ভাড়া দিতে হতো  আবার চিলমারী অংশে একবার ভাড়া দিতে হতো নৌকায়। যার ফলে আমাদের ডাবল টাকা ব্যায় হতো। এভাবেই ওই মুরুব্বী বিস্মিত  কন্ঠে বললেন আমাদের যে কত ভোগান্তি ছিল।  কত নদী বালুচর হেঁটে পার হয়ে যাওয়ার স্মৃতি আজ যেন সব স্বপ্নের মত  মনে হচ্ছে তিস্তা সেতুর বাস্তব রুপ দেখে। ওই মুরুব্বী কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন হামার তিস্তা সেতু হামার কাছে পদ্মা সেতুর চেয়েও দামি বাহে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। সেতুটিতে ২৯০টি পাইল ও ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সেতুর উভয়পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে নদী শাসনের কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রায় ১৩৩ একর জমি।এলজিইডি সূত্রে আরও জানা যায় সেতুটি এ মাসেই উদ্বোধন হবে বলে আশা করা যায়। সেতুটির প্রায় ৯৮% – ৯৯%  কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে হবে বলে ধারণা করা হয়।