০৮:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লেকসিটি মসজিদে তারাবীর সময়ে যা হয় তাই নিয়ে এক ব্যক্তি যা বললেন

  • মো ইমন আহামেদ
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • 191
মসজিদের কিছু বেসিক ভদ্রতা বা আচরণবিধি আছে। আমাদের সন্তানদের সেই আদব শেখানোর দায়িত্ব আমাদেরই। সেটা বাইরের কেউ এতটা যত্ন নিয়ে শেখাবেনা, যেটা আপনি পারবেন। ইদানিং মসজিদে তারাবীর নামাজে গেলে দেখি কিছু শিশু -কিশোর বয়সী (৯-১৬বছর) ছেলে নামাজরত ব্যক্তিদের সামনে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। মসজিদে এসি চলা অবস্থায় দরজা খুলে বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করে। পেছনের সারিতে বসে উচ্চস্বরে গল্পগুজব করে। গতরাতে দেখলাম একদল বাচ্চা দিয়াশলাই কাঠি জ্বালিয়ে তিনতলার বারান্দা থেকে নীচে ফেলছে। এটা ওদের কাছে খেলা। আপনিও হয়তো আপনার বাচ্চার দুষ্টুমি হিসাবে মৃদু হেসে ব্যাপারটা এড়িয়ে যাবেন। কিন্তু এই জ্বলন্ত কাঠি যদি এসির আউটারে গ্যাসের লাইনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফো রণ ঘটায়, সেটাকে কী বলবেন? বাচ্চাদের খেলা নাকি অভিভাবক হিসাবে আপনার নির্বুদ্ধিতা? আপনি বলতে পারেন আমেরিকা, কাতার, সিরিয়ার বাচ্চারা মসজিদে দৌড়ায়, তাই আমাদের দেশে দৌড়ালেও সমস্যা নেই। এগুলো খোঁড়া যুক্তি। ঐসব দেশের বাচ্চারা আরো অনেক শিক্ষনীয় কাজে ব্যস্ত থাকে, আপনার সন্তান মোবাইলে আসক্ত হওয়া ছাড়া তেমন বিশেষ কোন কাজে ব্যাস্ত থাকে কিনা খোঁজ নিয়েছেন? নাকি আপনি নিজেও মোবাইলে আসক্ত বলে সন্তানের খোঁজ নেয়ার সময় পান না? এই কথা বলার মানে, সন্তান নিয়ে মসজিদে আসতে নিরুৎসাহিত করা না। শুধু মনে করিয়ে দেয়া, সন্তানকে মসজিদের আদবগুলো শেখানো। সে ভুল করবে, আপনি শেখাবেন। যতবার ভুল করবে, ততবার শেখাবেন। ইনশাআল্লাহ পরম করুনাময় তাকে হেদায়েত দিবেই। এই জন্য চেষ্টা করবেন, সন্তানকে পাশে নিয়েই নামাজ আদায় করতে, এতে সে বাজে সঙ্গদোষে নষ্ট হওয়ার সুযোগ হারাবে। একটা জিনিস মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের কারণে অন্যের নামাজ যেন নষ্ট না হয়। নামাজে আসা মুসল্লীদের মন থেকে আপনার বা আপনার সন্তানের জন্য যেন অভিশাপ না আসে। এ শাপ অনেক কঠিন। মসজিদের কিছু বেসিক আচরণ নিচে উল্লেখ করা হলো । আপনার সন্তানকে শেখাতে পারেন।
১/ মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা অনুচিত।
২/ নামাজরত ব্যাক্তির সামনে হাঁটাহাঁটি করা গুনাহ।
৩/ নামাজরত কারো মনোযোগ নষ্ট করতে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করা, পাঞ্জাবী ধরে টানাটানি করা অনুচিত।
৪/ এসি চলাকালীন অযথা দরজা খুলে রেখে বাইরে আসা যাওয়া অনুচিত। প্রয়োজনে দরজা খোলা লাগলে, সেটা আবার আটকে দেয়া নিজেরই দায়িত্ব।
৫/ লাইট, ফ্যান এগুলোর সুইচ অপ্রয়োজনে টেপাটেপি না করাই উত্তম। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট বা লিকেজ থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃ ত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৬/ মোবাইল ফোন বন্ধ করা বা সাইলেন্ট রাখা। আপনার মোবাইল আছে, এটা মুসল্লীদের জানানো জরুরি না।
৭/ সামনের কাতার খালি রেখে পেছনে নামাজে না দাঁড়ানো।
৮/ মসজিদে বসে মোবাইলে ভিডিও না দেখা বা গেইম না খেলা।
৯/ ধারালো ছুড়ি, দিয়াশলাই এসব বিপ দ জনক বস্তু  নিয়ে মসজিদে না আসা।
১০/অযথা কাশাকাশি না করা।
১১/ সর্বোপরি অন্যের বিরক্তির কারণ না হওয়া।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে মূল কথা  আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আপনারই। তা নাহলে বাইরের মানুষ আপনার সন্তানকে যেদিন শিক্ষা দেয়া শুরু করবে, সেদিন আপনার ভালো লাগবেনা। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন গঠিত

লেকসিটি মসজিদে তারাবীর সময়ে যা হয় তাই নিয়ে এক ব্যক্তি যা বললেন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:২৫:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
মসজিদের কিছু বেসিক ভদ্রতা বা আচরণবিধি আছে। আমাদের সন্তানদের সেই আদব শেখানোর দায়িত্ব আমাদেরই। সেটা বাইরের কেউ এতটা যত্ন নিয়ে শেখাবেনা, যেটা আপনি পারবেন। ইদানিং মসজিদে তারাবীর নামাজে গেলে দেখি কিছু শিশু -কিশোর বয়সী (৯-১৬বছর) ছেলে নামাজরত ব্যক্তিদের সামনে দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে। মসজিদে এসি চলা অবস্থায় দরজা খুলে বারান্দায় দৌড়াদৌড়ি করে। পেছনের সারিতে বসে উচ্চস্বরে গল্পগুজব করে। গতরাতে দেখলাম একদল বাচ্চা দিয়াশলাই কাঠি জ্বালিয়ে তিনতলার বারান্দা থেকে নীচে ফেলছে। এটা ওদের কাছে খেলা। আপনিও হয়তো আপনার বাচ্চার দুষ্টুমি হিসাবে মৃদু হেসে ব্যাপারটা এড়িয়ে যাবেন। কিন্তু এই জ্বলন্ত কাঠি যদি এসির আউটারে গ্যাসের লাইনের সংস্পর্শে এসে বিস্ফো রণ ঘটায়, সেটাকে কী বলবেন? বাচ্চাদের খেলা নাকি অভিভাবক হিসাবে আপনার নির্বুদ্ধিতা? আপনি বলতে পারেন আমেরিকা, কাতার, সিরিয়ার বাচ্চারা মসজিদে দৌড়ায়, তাই আমাদের দেশে দৌড়ালেও সমস্যা নেই। এগুলো খোঁড়া যুক্তি। ঐসব দেশের বাচ্চারা আরো অনেক শিক্ষনীয় কাজে ব্যস্ত থাকে, আপনার সন্তান মোবাইলে আসক্ত হওয়া ছাড়া তেমন বিশেষ কোন কাজে ব্যাস্ত থাকে কিনা খোঁজ নিয়েছেন? নাকি আপনি নিজেও মোবাইলে আসক্ত বলে সন্তানের খোঁজ নেয়ার সময় পান না? এই কথা বলার মানে, সন্তান নিয়ে মসজিদে আসতে নিরুৎসাহিত করা না। শুধু মনে করিয়ে দেয়া, সন্তানকে মসজিদের আদবগুলো শেখানো। সে ভুল করবে, আপনি শেখাবেন। যতবার ভুল করবে, ততবার শেখাবেন। ইনশাআল্লাহ পরম করুনাময় তাকে হেদায়েত দিবেই। এই জন্য চেষ্টা করবেন, সন্তানকে পাশে নিয়েই নামাজ আদায় করতে, এতে সে বাজে সঙ্গদোষে নষ্ট হওয়ার সুযোগ হারাবে। একটা জিনিস মনে রাখবেন, আপনার সন্তানের কারণে অন্যের নামাজ যেন নষ্ট না হয়। নামাজে আসা মুসল্লীদের মন থেকে আপনার বা আপনার সন্তানের জন্য যেন অভিশাপ না আসে। এ শাপ অনেক কঠিন। মসজিদের কিছু বেসিক আচরণ নিচে উল্লেখ করা হলো । আপনার সন্তানকে শেখাতে পারেন।
১/ মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা অনুচিত।
২/ নামাজরত ব্যাক্তির সামনে হাঁটাহাঁটি করা গুনাহ।
৩/ নামাজরত কারো মনোযোগ নষ্ট করতে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করা, পাঞ্জাবী ধরে টানাটানি করা অনুচিত।
৪/ এসি চলাকালীন অযথা দরজা খুলে রেখে বাইরে আসা যাওয়া অনুচিত। প্রয়োজনে দরজা খোলা লাগলে, সেটা আবার আটকে দেয়া নিজেরই দায়িত্ব।
৫/ লাইট, ফ্যান এগুলোর সুইচ অপ্রয়োজনে টেপাটেপি না করাই উত্তম। ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট বা লিকেজ থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃ ত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৬/ মোবাইল ফোন বন্ধ করা বা সাইলেন্ট রাখা। আপনার মোবাইল আছে, এটা মুসল্লীদের জানানো জরুরি না।
৭/ সামনের কাতার খালি রেখে পেছনে নামাজে না দাঁড়ানো।
৮/ মসজিদে বসে মোবাইলে ভিডিও না দেখা বা গেইম না খেলা।
৯/ ধারালো ছুড়ি, দিয়াশলাই এসব বিপ দ জনক বস্তু  নিয়ে মসজিদে না আসা।
১০/অযথা কাশাকাশি না করা।
১১/ সর্বোপরি অন্যের বিরক্তির কারণ না হওয়া।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে মূল কথা  আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দেয়ার দায়িত্ব আপনারই। তা নাহলে বাইরের মানুষ আপনার সন্তানকে যেদিন শিক্ষা দেয়া শুরু করবে, সেদিন আপনার ভালো লাগবেনা। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।