১০:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে শিলং তীরের রাজা দিপুর জোর কোথায় ?

  • Solim Ahmed
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • 60

সিলেট ব্যুরো:- ১৯৯০ সালে সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের শিলং ও গৌহাটি এলাকা থেকে চালু হয় ‘শিলং তীর’ নামের জুয়া খেলা। সেই থেকে এখনও চলছে তীর নামক সেই জুয়া। কখনও ওপেন আবার কখনও গোপনে চলে এই জুয়া খেলা। পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে তীরনামক জুয়া খেলার প্রভাবছিল বেশী। নগরীর আনাচে কানাচে দেখা মিলত এই জুয়ার খেলোয়াড়দের। লাখপতি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জুয়া খেলে দিনশেষে  ফকির হয়ে ঘরে ফিরতেন দিন মজুর, রিক্সা ড্রাইভার ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। অপর দিকে পকেট ভারী করতেন জুয়ার বোর্ডের মালিক। তেমনই একজন হলেন দিপু।  মাছিমপুরের মৃত আব্দুল আওয়ালের নাতী ও আওয়ামিলীগ নেতা আব্দুল হান্নানে ছেলে দিপুর নগরীর বিভিন্ন স্হানে রয়েছে জুয়ার বোর্ড। বিশেষ করে মাছিমপুর,  মেন্দিবাগ, সোবহানীঘাট, ছালিবন্দর ও কালিঘাটে চলে তার জুয়া ও মাদকের হাট। এসব জুয়া ও মাদক ব্যবসার কারনে দিপুর উপর হয়েছে মামলা। তারপরও দিপু বুক ফুলিয়ে ঘুরাফেরা করছেন।
স্হানীয় সুত্রে জানা যায়, দিপু নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে জড়িত। সেই সাথে তার রয়েছে শিলং তীরের বোর্ড। মাছিমপুর ও কালিঘাটে বসে তার জুয়ার বোর্ড। আরো রয়েছে মাদকের ব্যবসা। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও গত ৫ আগষ্টের পর তার বিরুদ্ধে ৫ টি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়। মোট ৮/৯ টি মামলার আসামী হয়েও দিপু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।  দিপুর আরেক ভাই মনজু আহমদ। তিনিও যুবলীগ নেতা, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির স্বামী যুবলীগ ক্যাডার আলম খান মুক্তির বলয়ের নেতা। অপর দিকে দিপু ভারতে পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক রাহেল সিরাজের ক্যাডার। দিপুর পুরো পরিবার আওয়ামিলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। দিপুর রয়েছে মাছিমপুরে কিশোর গ্যাং নামক ভয়ংকর একটি গ্রুপ। জানা যায়, এ গ্রুপের সব সদস্য তাদেরই কলোনীর ভাড়াটে রিকসওয়ালা, ভ্যানওয়াল তরকারিওয়ালাদের ছেলে টুকাইরা।  এদের দিয়েই চলে দিপুর রাজত্ব। এসব কিশোর গ্যাংদের ভয়ে এলাকায় কেউ কিছু বলতে পারে না। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরের ল’কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মোটরসাইকেল পার্কিং নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজিজুল হক আজিজের ওপর হামলা করে দিপু ও তার বাহিনী। হামলা চালিয়ে আহত করে  সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আজিজুল হোসেন আজিজসহ ৪-৫ জনকে। এসময় দিপুর নেতৃত্বে প্রায় ১৫-২০ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার (১২ মার্চ) স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী মোস্তাক আহমদ বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এজাহারে ২৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।  কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, রাতে মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। এদিকে আজিজের উপর হামলার ঘটমায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আাসামী দিপুর ভাই,সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির স্বামী মনজু আহমদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে আনবেন না: শিক্ষা উপদেষ্টা

সিলেটে শিলং তীরের রাজা দিপুর জোর কোথায় ?

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

সিলেট ব্যুরো:- ১৯৯০ সালে সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের শিলং ও গৌহাটি এলাকা থেকে চালু হয় ‘শিলং তীর’ নামের জুয়া খেলা। সেই থেকে এখনও চলছে তীর নামক সেই জুয়া। কখনও ওপেন আবার কখনও গোপনে চলে এই জুয়া খেলা। পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে তীরনামক জুয়া খেলার প্রভাবছিল বেশী। নগরীর আনাচে কানাচে দেখা মিলত এই জুয়ার খেলোয়াড়দের। লাখপতি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জুয়া খেলে দিনশেষে  ফকির হয়ে ঘরে ফিরতেন দিন মজুর, রিক্সা ড্রাইভার ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। অপর দিকে পকেট ভারী করতেন জুয়ার বোর্ডের মালিক। তেমনই একজন হলেন দিপু।  মাছিমপুরের মৃত আব্দুল আওয়ালের নাতী ও আওয়ামিলীগ নেতা আব্দুল হান্নানে ছেলে দিপুর নগরীর বিভিন্ন স্হানে রয়েছে জুয়ার বোর্ড। বিশেষ করে মাছিমপুর,  মেন্দিবাগ, সোবহানীঘাট, ছালিবন্দর ও কালিঘাটে চলে তার জুয়া ও মাদকের হাট। এসব জুয়া ও মাদক ব্যবসার কারনে দিপুর উপর হয়েছে মামলা। তারপরও দিপু বুক ফুলিয়ে ঘুরাফেরা করছেন।
স্হানীয় সুত্রে জানা যায়, দিপু নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে জড়িত। সেই সাথে তার রয়েছে শিলং তীরের বোর্ড। মাছিমপুর ও কালিঘাটে বসে তার জুয়ার বোর্ড। আরো রয়েছে মাদকের ব্যবসা। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও গত ৫ আগষ্টের পর তার বিরুদ্ধে ৫ টি রাজনৈতিক মামলা দায়ের করা হয়। মোট ৮/৯ টি মামলার আসামী হয়েও দিপু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।  দিপুর আরেক ভাই মনজু আহমদ। তিনিও যুবলীগ নেতা, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির স্বামী যুবলীগ ক্যাডার আলম খান মুক্তির বলয়ের নেতা। অপর দিকে দিপু ভারতে পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সিলেট জেলার সাধারন সম্পাদক রাহেল সিরাজের ক্যাডার। দিপুর পুরো পরিবার আওয়ামিলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। দিপুর রয়েছে মাছিমপুরে কিশোর গ্যাং নামক ভয়ংকর একটি গ্রুপ। জানা যায়, এ গ্রুপের সব সদস্য তাদেরই কলোনীর ভাড়াটে রিকসওয়ালা, ভ্যানওয়াল তরকারিওয়ালাদের ছেলে টুকাইরা।  এদের দিয়েই চলে দিপুর রাজত্ব। এসব কিশোর গ্যাংদের ভয়ে এলাকায় কেউ কিছু বলতে পারে না। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরের ল’কলেজ সংলগ্ন এলাকায় মোটরসাইকেল পার্কিং নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজিজুল হক আজিজের ওপর হামলা করে দিপু ও তার বাহিনী। হামলা চালিয়ে আহত করে  সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক ছাত্রদল নেতা আজিজুল হোসেন আজিজসহ ৪-৫ জনকে। এসময় দিপুর নেতৃত্বে প্রায় ১৫-২০ টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার (১২ মার্চ) স্বেচ্ছাসেবকদল কর্মী মোস্তাক আহমদ বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এজাহারে ২৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।  কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, রাতে মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। এদিকে আজিজের উপর হামলার ঘটমায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আাসামী দিপুর ভাই,সাবেক মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির স্বামী মনজু আহমদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  বাকি আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।