
কুড়িগ্রামে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গসংগঠনের অর্ধশত নেতাকর্মী সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে কুড়িগ্রাম জেলা-উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের আয়োজনে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পদধারী ৫০জন নেতাকর্মী এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় যুব সংহতি কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক রাজু আহম্মেদ রাজ্জাক বলেন, সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকাকলীন ভালো-মন্দ মিলে দীর্ঘ সময় পার করেছি। এসময়, অনেকের জন্য ভালো কিছু করতে পেরেছি, আবার অনেকের খারাপও লেগেছে। এজন্য সবার কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু বিগত কিছুদিন থেকে লক্ষ্য করছি দলটির সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং জনগণের সাথে সম্পৃক্ততা অনেক কমে গেছে। ফলশ্রুতিতে অন্য কারো কথায় প্ররোচিত না হয়ে আমরা জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতৃত্ব পর্যায়ের নেতাকর্মী সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে পূর্বের সকল পদ পদবী থেকে অব্যাহতি প্রদান করলাম।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় যুব সংহতি কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সদস্য সচিব জালাল উদ্দিন, মোগলবাসা ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ইয়াকুব আলী আইয়ুব, ফুলবাড়ী উপজেলা জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম আজ থেকে জাতীয় পার্টি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের সাথে আমাদের কোন প্রকার সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা নাই। একই সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের মাধ্যমে সকলকে জানিয়ে দিতে চাই, আমাদের সাংগঠনিক পরিচয় থাকাকালীন যে সকল দলীয় কর্মসূচি পালন করেছি তার কোন দায়-দায়িত্ব আর আমাদের উপর বর্তাবে না।
বিশ্বস্থসূত্রে জানা যায়, জাপা থেকে পদত্যাগকৃত এসব নেতাকর্মী ছাত্র-জনতার নতুন ধারার রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাপা থেকে পদত্যাগকৃত নেতাকর্মীদের এনসিপিতে যোগদানের বিষয়ে কথা হলে জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক এ্যাডভোকেট আব্দুল বারেক ও রাশেদুজ্জামান তাওহীদ জানান, এনসিপি একটি নতুন ধারার মধ্যমপন্থী রাজনৈতিক দল। ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসর না হলে যে কাউকে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে এনসিপি সুযোগ দেয়া উচিৎ।
বিষয়টি জানতে চাইলে জাতীয় যুব সংহতি কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক রাজু আহম্মেদ রাজ্জাক জানান, আমরা যারা পদত্যাগ করেছি তারা সবাই মিলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো, এখনও কোন ফাইনালি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে আমরা অবশ্যই রাজনীতির ব্যাপারে ১৯৭১ এবং জুলাই অভ্যুত্থানের শক্তিকে বেচে নিবো।
এ ব্যাপারে কথা হলে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ জানান, এনসিপি একটি উদারমনা দল, কেউ যদি ফ্যাসিস্টদের দোসর না হয় এবং এন্টি ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে চায় তবে অবশ্যই এনসিপি তাদের ওয়েলকাম জানাবে।