
ঐতিহ্যবাহী ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার,ঢাকাতে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ম করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল -বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা, বুদ্ধ পূজা উৎসর্গ, শীল গ্রহণ, অষ্ট পরিস্কার সহ সংঘদান,নববর্ষের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা, ভিক্ষু সংঘের সদ্ধর্ম দেশনা। সকাল ৯ টা থেকে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নর নারীগণ, ধর্মপ্রাণ উপাসক -উপাসিকা গন বুদ্ধ পূজা নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করে তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ মহামতি গৌতম বুদ্ধের চরণে পূজা অর্চনা দেওয়ার জন্য ভিড় জমায়।অত্র বিহারে বিহারাধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সম্মানিত সভাপতি ভদন্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথের,উপাধ্যক্ষ আনন্দ মিত্র মহাথের উপাধ্যক্ষ ধর্মানন্দ মহাথের মহোদয়ের উপস্থিতিতে ভিক্ষুসংঘকে সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি নববর্ষের বিভিন্ন তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, বাংলা নববর্ষ আবহমান বাংলার বাঙালি একটি ঐতিহ্য। বাঙালির কৃষ্টি, সভ্যতা ও সংস্কৃতির নিদর্শন এই নববর্ষের মধ্যে ফুটে উঠে। ঢাকাসহ গ্রাম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মেলা বসে। এই মেলায় সর্বস্তরের জনসাধারণ আনন্দ করে, ঘুরে বেড়ায়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করে, শিশুরা নাগরদোলায় চড়ে এবং ঘরে ঘরে গ্রাম বাংলার উপাধেয় বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরি করে। আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন, সংঘের প্রচার সচিব মি. শীলব্রত বড়ুয়া , সহ অর্থ সচিব মি. জিতু প্রিয় বড়ুয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি মিস্টার রঞ্জিত কুমার বড়ুয়া । পর্যায়ক্রমে মহাকারুনিকো গৌতম বুদ্ধের সম্মুখে বসে সমবেত প্রার্থনা, বুদ্ধপূজা উৎসর্গ, শীল গ্রহণ, সদ্ধর্ম দেশনা অষ্ট পরিস্কার সহ মাসিক সংঘদান অনুষ্ঠান সম্পন্ম করে প্রয়াত জাতিগণের উদ্দেশ্যে পুণ্য দান করা হয়। উল্লেখ্য যে এই মাসিক বিগত কয়েক বছর যাবত পর্যায়ক্রমে চলে। এ পর্যন্ত মোট ৭৪২ টি সংঘদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সার্বজনীন এই সংঘদান অনুষ্ঠানের সূচনা করেন স্বরূপানন্দ ভিক্ষু,শীলব্রত বড়ুয়া ও কল্লোল বড়ুয়া।করোনাকালীন কিছুদিন বন্ধ থাকার পর পরবর্তীতে তুষার বড়ুয়া, প্রয়াত অজয় বড়য়া, অধ্যাপক হেলেন কান্তি বড়ুয়া,ঝন্টু বড়ুয়া, প্রভাত বড়ুয়া সহ আরো অনেকে যুক্ত থেকে পুনরায় চালু করেন। বছরের প্রথম দিন এই সার্বজনীন সংঘদান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ করা হয়। সন্ধ্যায় আবারো ধর্মপ্রাণ উপাসক উপাসিকা বৃন্দ মন্দিরে আগমন করে প্রদীপ পূজা, ধূপ পূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ সহ বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাদি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সমাপ্তি ঘটে।