
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়নে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় বিচার না হয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশে আপোষ-মীমাংসার নামে ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে খরনা সরকারপাড়া এলাকার আনসার আলীর পুত্র বরাত আলী (৩৭) প্রতিবেশী সংখ্যালঘু নারীকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ভুট্টা পাতা ছিঁড়তে গেলে সুযোগ বুঝে বরাত আলী তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই নারী চিৎকার করলে বরাত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বিষয়টি ভুক্তভোগীর ভাই শ্রী পলাশ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান কালু, যুবদল নেতা আবুল কাশেম এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ফেরদৌসের কাছে অভিযোগ করেন। তারা ঘটনাটি সালিশের মাধ্যমে আপোষে মীমাংসা করেন বলে জানানো হয়। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, বিচারপ্রক্রিয়ায় তাকে জোর করে চুপ করিয়ে রাখা হয় এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে, ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু পরদিন জানা যায়, অভিযুক্ত বরাত আলীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আগেই নেওয়া হয়েছে, যার কিছু অংশও তাকে দেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগীর ভাই পলাশ বলেন, “আমরা টাকা চাইলে তারা তালবাহানা করে। সামান্য কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে, বাকি টাকা তাদের ছেলেপেলের খরচে গেছে।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বিচার ব্যবস্থার নামে প্রহসন চালিয়ে একজন ধর্ষণচেষ্টার শিকার নারীর ক্ষতিপূরণের অর্থ লুটে নেওয়া চরম অমানবিক ও অনৈতিক। এ বিষয়ে যুবদল নেতা আবুল কাশেম বলেন, “আমি ওই দরবারে উপস্থিতই ছিলাম না।” অন্যদিকে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান কালু বলেন, “সামান্য কিছু জরিমানা করা হয়েছিল, যা ভিকটিমের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওয়াদুদ আলম বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার এখনো ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।