০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেওয়ানগঞ্জে বিলীন হওয়ার পথে চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন

  • নূর ই ইলাহী
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • 41

যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন বিদ্যালয়ের ভবনের কাছে চলে এসেছে। নদীর ভাঙন চলতে থাকায় বিদ্যালয়ের ভবনটি এখন যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে স্কুলটির আশপাশে অর্ধশত বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকি থাকায় বিদ্যালয়টির আশপাশের লোকজন বসতভিটা ভেঙে নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, যমুনা নদীর ভাঙনে উপজেলার কিশোর মোড়, চর ডাকাতিয়াপাড়া, খান পাড়া, বড় খালসহ, প্রায় ৭টি গ্রামের অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিতে চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও জাতীয়করণ হয় ২০১৩ সালে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন সিদ্দিকা বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে ১৬০ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। এর মধ্যে ৯০ জনই ছাত্রী। এখন বিদ্যালয়ের ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় পড়েছি।’
স্থানীয় লোকজন বলছেন, ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা বিদ্যালয়টি নদীতে ভেঙে গেলে এলাকায় বড় ধরনের ভাঙন হতে পারে। তাই ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীপারের হাজারো মানুষ। চর ডাকাতিয়াপাড়া  এলাকার বাসিন্দা পলাশ মিয়া বলেন, ‘নদীভাঙনে আমার জমিজমা সব শেষ। থাকার ঘরটাও ভাঙতে হয়েছে। যেভাবে নদীর পাড় ধসে পড়ছে, তাতে বাড়িঘর হারিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। খুব বিপদের মুখে আছি আমরা।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান সরজমিন পরিদর্শনে এসে জানান, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে। স্কুলটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য অস্থায়ীভাবে ঘর নির্মাণ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘ডাকাতিয়াপাড়া এলাকার জরুরি ব্যবস্থায় আমরা কিছু কাজ করেছি। যেসব স্থানে নদীভাঙন হচ্ছে, সেখানে নদীর তীর সংরক্ষণে আমরা কাজ করব। বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য ভাঙন ঠেকাতে আমরা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। তবে বিদ্যালয়ের ভবনটির যে মূল্য, তার থেকে বেশি মূল্যের জিও ব্যাগ ফেলানো লাগবে। আমরা তবু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিদ্যালয়টি রক্ষা করা মনে হয় না সম্ভব হবে।’

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

ওষুধ খাওয়া হলোনা ছেলের, ওষুধ কিনতে গিয়ে নছিমনের ধাক্কায় কৃষক বাবার মৃত্যু

দেওয়ানগঞ্জে বিলীন হওয়ার পথে চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। ভাঙতে ভাঙতে নদী এখন বিদ্যালয়ের ভবনের কাছে চলে এসেছে। নদীর ভাঙন চলতে থাকায় বিদ্যালয়ের ভবনটি এখন যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে স্কুলটির আশপাশে অর্ধশত বসতঘর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকি থাকায় বিদ্যালয়টির আশপাশের লোকজন বসতভিটা ভেঙে নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, যমুনা নদীর ভাঙনে উপজেলার কিশোর মোড়, চর ডাকাতিয়াপাড়া, খান পাড়া, বড় খালসহ, প্রায় ৭টি গ্রামের অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিতে চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও জাতীয়করণ হয় ২০১৩ সালে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন সিদ্দিকা বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে ১৬০ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। এর মধ্যে ৯০ জনই ছাত্রী। এখন বিদ্যালয়ের ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিয়ে আমরা খুব চিন্তায় পড়েছি।’
স্থানীয় লোকজন বলছেন, ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা বিদ্যালয়টি নদীতে ভেঙে গেলে এলাকায় বড় ধরনের ভাঙন হতে পারে। তাই ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীপারের হাজারো মানুষ। চর ডাকাতিয়াপাড়া  এলাকার বাসিন্দা পলাশ মিয়া বলেন, ‘নদীভাঙনে আমার জমিজমা সব শেষ। থাকার ঘরটাও ভাঙতে হয়েছে। যেভাবে নদীর পাড় ধসে পড়ছে, তাতে বাড়িঘর হারিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। খুব বিপদের মুখে আছি আমরা।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান সরজমিন পরিদর্শনে এসে জানান, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় যমুনা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে। স্কুলটি বিলীন হলেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য অস্থায়ীভাবে ঘর নির্মাণ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘ডাকাতিয়াপাড়া এলাকার জরুরি ব্যবস্থায় আমরা কিছু কাজ করেছি। যেসব স্থানে নদীভাঙন হচ্ছে, সেখানে নদীর তীর সংরক্ষণে আমরা কাজ করব। বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য ভাঙন ঠেকাতে আমরা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। তবে বিদ্যালয়ের ভবনটির যে মূল্য, তার থেকে বেশি মূল্যের জিও ব্যাগ ফেলানো লাগবে। আমরা তবু বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিদ্যালয়টি রক্ষা করা মনে হয় না সম্ভব হবে।’