
সিলেট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এক ঐতিহাসিক জনপদ। পাথরখেকো চক্রের দানবীয় থাবায় বিলীন হয়ে গেছে সিলেটের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অন্যতম স্মারক ‘শাহ আরেফিন টিলা’। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত পুরোনো এই টিলার এক চূড়ায় থাকা ঐতিহাসিক মাজারটি এখন শুধুই ইতিহাস। যেখানে একসময় হাজারো ভক্তের সমাগম হতো, সেখানে এখন শুধুই ধু-ধু বালুচর আর ধ্বংসস্তূপ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগাতেই দিনের পর দিন পাহাড় কেটে শতকোটি টাকার পাথর লুট করেছে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। এই লুটপাটের ফলে সরকার হারিয়েছে বিপুল রাজস্ব, আর প্রকৃতি হারিয়েছে তার ভারসাম্য। ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র সরেজমিনে দেখা যায়, শাহ আরেফিন টিলার অস্তিত্ব বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। টিলার মাটি ও পাথর কেটে এমনভাবে সমতল করা হয়েছে যে, নতুন কেউ গেলে বুঝতেই পারবেন না এখানে একসময় বিশাল পাহাড় ও মাজার ছিল। স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালী পাথরখেকোরা এক্সেভেটর ও বোমা মেশিন ব্যবহার করে টিলাটি ধসিয়ে দিয়েছে। মাজার ধ্বংস করে লুট করা হচ্ছে মাটির নিচের পাথর। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার মতে, এই ধ্বংসযজ্ঞ শুধু একটি পাহাড়ের মৃত্যু নয়, এটি সিলেটের পরিবেশের জন্য এক অশনি সংকেত। এখনই যদি বাকি টিলাগুলো রক্ষায় ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে কোম্পানীগঞ্জ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। নেপথ্যে যারা: উঠে এল ১৫ জনের নাম অনুসন্ধানে ও স্থানীয় ভুক্তভোগীদের জবানবন্দিতে এই অপরাধের সাথে জড়িত একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের নাম উঠে এসেছে। চিকাডহর ও জালিয়ার পার এলাকার এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টিলা ধ্বংসের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যে অভিযুক্তরা হলো,
চিকাডহরের আনাই, আনজু, জব্বার, আব্দু রহিম, খলিল, আনফর, আকদ্দুছ। আইয়ুব আলীর পরিবারের নেতৃত্বে, আলীনুর ,শাহিন , ইসমাইল গং পিতা: আইয়ুব আলী।জালিয়ার পার থেকে আব্দুল আলীর পরিবার: নেতৃত্বে, ফয়জুর রহমান, হুশিয়ার, হুসন, সেবুল গং পিতা: আব্দুল আলী। ইসমাইল ,জালিয়ার পার। রাতের আঁধারে পাথর পরিবহনকারী ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলের কারণে গ্রামীণ ছোট রাস্তা ধ্বংসের পর্যায়ে।জনমনে অসন্তোষ অতিরিক্ত দোলার কারণে ছোট বাচ্চা ও বৃদ্ধদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা। স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশবাদীরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ঐতিহাসিক এই মাজার ও পাহাড় চোখের সামনে গিলে খাচ্ছে পাথরখেকোরা, প্রশাসনের যথাযথ ভূমিকা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর, অবিলম্বে উল্লিখিত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং লুট হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানা ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম খান ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া এর সাথে কথা বললে জানা যায়। উপজেলা প্রশাসন এবং থানা প্রশাসন উনাদের অভিযান চলমান রেখেছেন এই দুষ্কৃতিকারী চক্রের হোতাদের আইনের আওতায় আনার জন্য।
সালাউদ্দিন রানা। 



















