
৬৫ বছর বয়সী বিধবা আনোয়ারা বেগমের জীবনে এখন শুধুই কষ্ট ও অবহেলার গল্প। তার কোনো ছেলে সন্তান ছিল না। স্বামী মৃত কিয়ামদ্দি শিকদারও রেখে যাননি কোনো জমিজমা বা সহায়-সম্পদ। আনোয়ারা বেগমর জীবনের শেষ সময়ে একমাত্র আশ্রয় ছিল বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া ওয়ারিশ সূত্রে সামান্য জমিজমা ও ঘরবাড়ি।
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং একমাত্র মেয়ের ছেলে নাতি জুয়েলের প্রতি বিশ্বাস রেখে, তিনি কিছু জমি ও সম্পত্তি তার নামে লিখে দেন। কিন্তু সেই বিশ্বাসই এখন তার অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নাতি বিয়ে করার পর পুত্রবধূর অবহেলা, দুর্ব্যবহার ও নির্দয় আচরণে প্রতিনিয়ত অপমানিত হচ্ছেন আনোয়ারা বেগম।
পূর্ববর্তীতে তিনি তার মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে শর্তসাপেক্ষে আরও কিছু সম্পত্তি লিখে দেন—শর্ত ছিল আজীবন ভরণপোষণ নিশ্চিত করা। কিন্তু দিনশেষে তারা দিয়েছে একমুঠো ভাত, তাও অবহেলাসহ। তার শারীরিক অসুস্থতা, বৃদ্ধ বয়সের নানা রোগের চিকিৎসা কেউ করছে না। নেই কোনো সরকারি সহায়তা, নেই কোনো সমাজের দৃষ্টি।
এমন অবস্থায় প্রশ্ন ওঠে—এই সমাজে একজন নারীর, বিশেষ করে একজন মা ও দাদীর, এত অবহেলার কারণ কী? যে সম্পদ তিনি নিজ হাতে অন্যদের দিলেন, আজ তিনিই সেই সম্পদের বিনিময়ে এক চিলতে ভালোবাসা, যত্ন, ও চিকিৎসার অধিকারটুকুও পাচ্ছেন না।
আনোয়ারা বেগম আজ সমাজ, প্রশাসন এবং মানবাধিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তিনি চান, যেন তার মতো অন্য কোনো নারী যেন এমন পরিণতির শিকার না হন।