
কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার মানিকান্দি গ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে এসহাক মোল্লা জুয়েল বহিরাগতদের নিয়ে মানিককান্দি গ্রামে প্রবেশ করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ মানিককান্দি গ্রামে প্রবেশ করে পরিস্থিতি শান্ত করেছেন। এসময় পুলিশ কিছু দেশীয় অস্ত্র ও পাইপ উদ্ধার করে বহিরাগত ৬ জনসহ মোট ৭ জনকে আটক করে। আটককৃতরা হলেন, মানিককান্দি গ্রামের মৃত মনু মিয়ার ছেলে শাহজাহান (৫৫), বহিরাগত দাউদকান্দি উপজেলার টামটা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে রায়হান (২১), একই গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে জিসান মাহমুদ (২০), মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. আরিফ (২০), মো. আলম মিয়ার ছেলে মো. আশরাফুল (২০), মনির হোসেনের ছেলে মো.ফয়সাল (২১) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. মাঈনুদ্দিন (২০)। তারা সবাই আওয়ামী লীগ নেতা আবু মোল্লার ভাড়া করা লোক। রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে, রাস্তায় ইটপাটকেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। সাধারণ মানুষের ভাষ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ২০টি সিএনজি ও ২ টি মাইক্রোতে প্রায় ২০০ জনের একটি গ্রুপ প্রবেশ করেছে মানিককান্দি গ্রামে। সেখানে তারা ৩-৪টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন বলে জানান। বাইতুল জিন্নাহ মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে একটি ককটেল বিস্ফোরণের আলামত পাওয়া গেছে। সেখান থেকে কিছু পাইপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মসজিদের ওয়ালের পাশ থেকে একটি টেটাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শহিদ উল্যাহ বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা ও সাইফুল মেম্বার গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে শোনে মানিককান্দি গ্রামে আসি। আবু মোল্লা গ্রুপ এতোদিন এলাকায় ছিলো না। এখন এলাকায় প্রবেশ করলে সাইফুল মেম্বার গ্রুপ বাঁধা দেন। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি এবং ৭ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসি। ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভিটিকান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মানিককান্দি গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা জহির মোল্লাকে (৩৫) দিনদুপুরে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের অনুসারী সাইফুল মেম্বারের লোকজন।
পরে নিহত জহির মোল্লার ছোট ভাই এসহাক মোল্লা জুয়েল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করলে সাইফুল মেম্বারসহ ৪০টি পরিবার এলাকা ছাড়া হয়ে পড়ে। তারা প্রায় ২২ মাস এলাকায় ঢুকতে পারে নি। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হলে সাইফুল মেম্বারের লোকজন গ্রামে ঢুকে আবু মোল্লাসহ তার লোকজনকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করে। দীর্ঘ ১১ মাস পর রোববার সকালে আবু মোল্লার গ্রুপ দলবল নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করে। বর্তমানে মানিককান্দি গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে অঘটন।