
পাবনায় এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় নিশান উদ্দিন (২৫) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. কামরুল হাসান খান আজ বিকেলে এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত নিশান পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার খানপুড়া পালপাড়ার মো. নূর উদ্দিনের ছেলে।
ঘটনার বিবরণ
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাবনা মহিলা কলেজের অনার্স পড়ুয়া ওই তরুণীকে নিশান উদ্দিন বিভিন্ন সময়ে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। ২০২৩ সালের ২৩ জুন রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নিশান ওই তরুণীর খানপুড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করেন। সরল মনে ঘরের দরজা খুলে দিলে নিশান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে দ্রুত পালিয়ে যান।
ধর্ষণের পর মেয়েটি প্রথমে লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। পরে তার বাবা-মাকে সব জানায়। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে নিশানের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে ভুক্তভোগী উর্মী খাতুন বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিচার প্রক্রিয়া
তদন্ত শেষে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আজ আদালত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
প্রতিক্রিয়া
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা আব্দুল আওয়াল বলেন, “এভাবে যদি ধর্ষণ মামলার সঠিক বিচার পাওয়া যায়, তাহলে সমাজ থেকে ধর্ষণ অনেকাংশে কমে যাবে।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন সবুজ জানান, আসামির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে আপিল করা হবে এবং আপিলের মাধ্যমে সাজা মওকুফ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন শাহীন এই রায়কে “ঐতিহাসিক” উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “এটার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”