
টানা বৃষ্টিপাতের প্রভাবে শাক-সবজির দাম বেড়েছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। তবে শহরতলীর বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি ও মরিচের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় শাক-সবজি ও মরিচের দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে ঝিনাইদহে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর প্রভাবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আবাদকৃত শাক-সবজির ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মারা গেছে মরিচের গাছ। যে কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম কেজি প্রতি দ্বিগুণ বেড়েছে। গ্রামীণ ও সাপ্তাহিক হাটগুলোতে পাইকারি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি প্রায় ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। তবে শহরতলীর বাজারগুলোতে মরিচের পাইকারি দাম ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। খুচরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়।
সদর উপজেলার হলিধানী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী হযরত আলী জানান, সোমবার (২০ জুলাই) পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২২০ টাকা থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শহরের বাজারগুলোতে মরিচের দাম কেজিতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেশি।
তিনি জানান, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পটল ২২ থেকে ২৫ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, গোল কচু প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুর লতি ২০/২৫ টাকা আটি, পুঁইশাক প্রতি আটি ২০/২৫ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৭০/৭৫ টাকা, পিয়াজ প্রতি কেজি ৫০/৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন জানান, গত সপ্তাহে শাক-সবজির যে দামে বিক্রি হয়েছে, তা চলতি সপ্তাহের শুরুতেই কেজি প্রতি ৫/১০ টাকা বেড়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম
নাহিদুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম বেড়েছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত বেশি, মরিচের গাছ মারা যাচ্ছে। এসব কথা বলে গলাকাটা দাম নিচ্ছেন দোকানীরা। আমাদের তো উপায় নেই। দাম বাড়ায় সীমিত পরিমাণে কাঁচা মরিচ কিনেছি।
তহুরা খাতুন নামে এক ক্রেতা বলেন, ১৫ দিন আগেও কাঁচা মরিচের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি ছিল। বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই মরিচের দাম বাড়ছে। দুই দিন আগে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি কাঁচা মরিচ কিনেছি। আজ তার দাম ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি। অন্যান্য সবজির দামও বাড়তি বলে জানান তিনি।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে পটল কেজি প্রতি ১৮/২০ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে এসব পণ্য কেজি প্রতি ৫/১০ টাকা লাভে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় শাক-সবজি ও কাঁচা মরিচের যোগান কমে গেছে। যে কারণে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।
সবজির পাইকারি আড়ৎদার শামসুল ইসলাম বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যে কারণে সবজির উৎপাদন ও বাজারে যোগান কম। ফলে দাম বেড়েছে। তবে গ্রামের বাজারগুলোতে সবজির দাম শহরের বাজারের চেয়ে কিছুটা কম।
কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাঁচা মরিচের গাছ বৃষ্টির পানিতে মারা যাচ্ছে। উৎপাদন কম হচ্ছে। দাম তো বাড়বেই। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে কাঁচা মরিচের দাম আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।