
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ‘পারিবারিক কলহের জেরে’ নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী বিরুদ্ধে।
ঘটনার একদিন পর রোববার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন বলে জানান হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী।
এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে উপজেলার সাতবাঁক ইউনিয়নের চরিপাড়া গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর স্বামীকে আটক করা হয় বলে জানান কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আউয়াল।
এর আগে শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার কান্দলা গ্রামে বাবার বাড়িতে ওই গৃহবধূর শরীরের আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
দগ্ধ সাবানা বেগম (২২) ওই গ্রামের আব্দুল জাব্বারের মেয়ে। তিনি ওসমানী হাসপাতালের চিকিৎসাধীন। আটক হোসেন আহমদ চৌধুরী আক্তার (৪০) একই গ্রামের বাসিন্দা।
চিকিৎসক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “আগুনে ওই নারীর শরীরের ৩৫ ভাগ দগ্ধ হয়েছে। তাকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য স্বজনদের বলা হয়েছে। কিন্তু পরিবার এখানে রেখেই চিকিৎসা করাতে চাচ্ছেন। “রোববার তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
কানাইঘাট থানার এসআই মো. শাহ আলম বলেন, “এক বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। এটি তাদের প্রথম সন্তান। আক্তার ঘুমন্ত অবস্থায় তার স্ত্রীর বিছানায় পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়।
“সোমবার দুপুরে স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় আক্তারকে আটক করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ মেয়েটির পরিবার মামলা করতে থানায় আসতেছে।”
লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফখর উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ঘটনাটি শোনার পর শনিবার রাতেই অগ্নিদগ্ধ সাবানা বেগমকে দেখতে হাসপাতালে যান। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানানোর পর নবজাতকে দাফন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাবানার বাবা আব্দুল জব্বার বলেন, “বছর খানেক আগে আক্তারের সঙ্গে সাবানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর বেশিরভাগ সময় আক্তার সাবানাকে নিয়ে আমার বাড়িতে থাকতেন।
“ঘটনার দিন রাতে আক্তার যখন বাড়িতে আসে তখন আমি ছিলাম না। বাড়িতে এসে সাবানার শরীরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় আক্তার। মেয়েটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।”
ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি আব্দুল আউয়াল।