
রাঙামাটির কাউখালীতে এক পোলট্রি ব্যবসায়ীর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) জেলার কলমপতি ইউনিয়নের নাইলেছড়ির মাঝেরপাড়া এলাকার একটি ঝোপ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় ব্যবসায়ীর দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর নাম মো. মামুন (৩৫)। তিনি কাউখালী উপজেলার সুগারমিল আদর্শগ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয়ভাবে পোলট্রি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মামুনের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে তিন ও আট বছর বয়সী ছেলে এবং নয় মাস বয়সী মেয়ে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মামুনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মচারী মো. কামরুল ইসলাম (৩০) ও তার স্ত্রী সাথী আক্তার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, পোলট্রি ব্যবসায়ী মো. মামুনের কর্মচারী ছিলেন ঘাতক কামরুল ইসলাম। গত ৭ জুলাই বিকেল থেকে নিখোঁজ হয় ব্যবসায়ী মামুন। ওইদিন রাতেই স্ত্রীকে ফোন করে মামুন তার ব্যাংকের দুটি চেক চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনীয়া উপজেলার রানীরহাট বাজার এলাকার জনৈক ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিতে বলেন। এরপর ৮ জুলাই মামুনের স্ত্রীর ফোনে মামুনের নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় অপহরণ করা হয়েছে তাকে। মামুনের স্ত্রী জানায় ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফোন করেন কামরুল। কাউখালী থানায় মামুনের স্ত্রী জিডি করার পর নড়েচড়ে বসে কাউখালী থানা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন এলাকায় কামরুলের সন্ধানে নামে। পরে গত সোমবার লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানীগঞ্জে তার এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ঘাতক কামরুলকে গ্রেপ্তার করে কাউখালী থানা পুলিশ। কামরুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মঙ্গলবার সকালে কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের মাঝের পাড়া এলাকায় ঝোপে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাটিতে পুতে রাখা মামুনের লাশ উদ্ধার করে কাউখালী থানা পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে ঘাতক কামরুল জানায়, মামুনকে রানীরহাট এলাকায় তার ভাড়া বাসায় স্ত্রীসহ চায়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে। পরে তাকে হত্যা করে লাশ দ্বিখণ্ডিত করে স্ত্রীসহ বস্তায় করে কাউখালী উপজেলার মাঝের পাড়া এলাকায় এসে তার ফুফা শশুরবাড়ির পাশে লাশ মাটিতে পুতে রেখে পালিয়ে যান। কামরুলের স্বীকারোক্তি মোতাবেক এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী সাথী আক্তারকে ও গ্রেপ্তার করেছে কাউখালী থানা পুলিশ। কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘাতক কামরুলকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে। কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম জানান, নিহত মামুনের সাবেক কর্মচারী ছিলো ঘাতক কামরুল। কিন্তু কর্মচারী থাকলেও সম্প্রতি তারা দুজনে মিলে শেয়ারে ব্যবসা করছিলেন। ধারনা করা হচ্ছে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বের কারণে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।