
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তন হলেও- রাজধানীর পল্লবীর থানার মিল্লাত ক্যাম্পের বিহারী বস্তি এলাকায় শক্তিশালী একটি সিন্ডিকেট মাদক ব্যবসা জমজমাটভাবে চালিয়ে আসছে।
জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর মাদকের অন্যতম আখড়া। বছরের পর বছর ধরে ভয়াবহ মাদকের বিস্তার এই এলাকায়। আগের চেয়ে আরো ভয়ংকর রূপে ছড়িয়ে পড়েছে এই সিন্ডিকেট। পুরো মিরপুরজুড়ে শতাধিক স্পটে প্রকাশ্যেই চলে মাদক ও জুয়া। গত ১০ বছরে মাদকের জের ধরে অন্তত ১৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এরপরও অবাধে মাদক কেনাবেচা চলছে মিরপুরে। পুলিশের অভিযানে কেউ কেউ গ্রেপ্তার হলেও জেলহাজতে বসে, এমনকি অনেকে দূরে আত্মগোপনে থেকেও নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের মাদক সাম্রাজ্য।
জানা গেছে, মিরপুরের মাদকের অভয় অরোণ্য খ্যাত মিল্লাত ক্যাম্পের সবচেয়ে বেশি পাইকারী হিরোইন বিক্রেতা হচ্ছেন আনোয়ারী। সচারচর তিনি কোটি টাকার নিচে কাউকে হিরোইন সাপ্লাই দেন না বলে জানা গেছে। তার নাম যশ এতটাই ছড়িয়েছে যে, তাকে এখন মাদকের মা হিরোইন আনোয়ারী হিসেবেই সবাই চিনে। দেশের বড় বড় প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে, শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও তাকে বেশ সমীহ করে চলে এবং তার কথায় উঠেবসে করে। অবশ্য প্রশাসনের সাথে দেন দরবার ঠিকঠাক না হলেই ধরা পড়ে আনোয়ারীর কোটি কোটি টাকার হিরোইন। বর্তমানে আনোয়ারী তার নিজের নিরাপত্তার জন্য ২০/২৫ জন সদস্যের একটি অস্ত্রধারী সক্রিয় বাহিনী গঠন করেছে। শুরুতে নিজে মাদক ব্যবসা শুরু করলেও এখন তার গোটা পরিবার এমনকি আত্নীয় স্বজনদেরও এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে নিয়েছে। আনোয়ারীর ছেলে ওয়াহিদ, আনোয়ারীর ভাগিনী সায়মা ও সাম্মি, আত্নীয় মাশআলী, মেয়ের জামাই কামরান, মাহতাবসহ ১৫ জন রয়েছে এই মাদক ব্যবসায়। এদের সকলেরই নামে রয়েছে মাদক মামলা। খুচরা বিক্রির ক্ষেত্রে আনোয়ারী গঠন করেছে ডেলিভারী ম্যান নামের প্রায় ২০ সদস্যর একটি বাহিনী। মাদকাসক্ত ক্রেতার হাতে অল্পসময়ে দ্রুত মাদক তুলে দেয়ার পাশাপাশি যাদের কাজ হলো- অপরিচিত কেউ আসলেই তার তথ্য জানানো এবং তার উপর নজরদারি করা। আনোয়ারীর প্রভাব এতটাই বেশি যে স্থানীয়ভাবে কারোরই সাহস হয় না তার বিরুদ্ধে কিছু বলার।