০৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পুলিশ সুপারের

  • Md.Sanaullah Sumon
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০২:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • 71
সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তেররশিয়া ও লক্ষীনারায়নপুর এলাকায় মহানন্দা ও পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের ককটেল বিষ্ফোরণ, হামলা এবং ঘরবাড়ি লুটপাটের ঘটনায় কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্তা নেই।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করমি। তিনি জানান, মূলত দৈনিক মানবজমিন ও নাগরিক টিভি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও সাবেক জেলা যুবদলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া মেম্বারের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য এবং অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে, যা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। আর সাংবাদিক ফারুক তার কয়েকজন সহকর্মীর গণমাধমে সুকৌশলে নিজেকে আড়াল করে এবং আওয়ামীগের তাণ্ডব বলে ফলাও করে সংবাদ পরিবেশন করেন। যা সম্পূর্ণ একপেশে এবং বস্তুনিষ্ঠ নয় বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সাংবাদিক ফারুক তার নিজের অপরাধ আড়াল, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং স্থানীয় নের্তৃত্ব এবং দাপট জিয়িয়ে রাখার জন্য অতিরঞ্জিত মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরিস্থিতি আরো উত্তেজিত করেছেন। তদন্তে দুপক্ষের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র কর্মী এবং সমর্থকদের জড়িতের সত্যতা পাওয়া গেছে, আর সেকারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামপুর তেররশিয়া পোড়াগ্রামে ককটেল বিস্ফোরণ ও দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এটি কোন রাজনৈতিক সংঘাত বা সরকার বিরোধী অপচেষ্টা নয় বা আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র মধ্যে আধিপত্য কেন্দ্রিক সংঘষর্ও নয়। বালু ও মাটি কাটাকে কেন্দ্র করেই মুলত দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এরই জের ধরে দফায় দফায় দুই গ্রুপের সংর্ঘষ হয়। সবশেষ গত ১১ জুলাই ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এই দ্বন্দ্ব সংঘাতে একটি পক্ষে জিয়া মেম্বার এবং আরেকটি পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী। এর আগে গত ১৫ জুন সাংবাদিক ফারুকের নির্দেশে জিয়া পক্ষের শহিদুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিক ফারুককে ১ নাম্বার আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এসব ককটেল বিষ্ফোরণ ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে থানায়। এসব মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপরাধীরা যেই রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, অভিযুক্ত সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ জানান, আমার প্রকাশিত সংবাদে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রের কোন কর্মকর্তা সেটির অপব্যাখ্যা করতে পারেন না। পুলিশ সুপার গণমাধ্যম্যের সামনে আমাকে ভিলেজ পলিটিক্সের একটি পক্ষের নেতা বানিয়ে দিলেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা আমার চাচা-চাচাতো ভাই। আমি তাদের নেতা নই বা ইসলামপুর ইউনিয়নের কোন বিষয়ে আমি সুবিধাভোগী বা গ্রাম্য রাজনীতিতে আমার কোন সম্পৃক্তা নেই।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ সুপারের বক্তব্যে একটিপক্ষ উৎসাহিত হবে। এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এর দায় কে নিবে?  সব অপরাধের খুঁটি রাজনীতি সেটি তিনি অস্বীকার করেছেন।
অপরদিকে, জিয়া মেম্বারকে এ ঘটনায় ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ছয় মাসেরও অধিক সময় ধরে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে ওই এলাকায়।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

হুজরাপুর মডেল একাডেমী প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতা অতি বৃষ্টিতে হাঁটু পানি, ব্যাহত পাঠদান

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পুলিশ সুপারের

পোস্ট হয়েছেঃ ০২:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের তেররশিয়া ও লক্ষীনারায়নপুর এলাকায় মহানন্দা ও পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও মাটি কাটা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের ককটেল বিষ্ফোরণ, হামলা এবং ঘরবাড়ি লুটপাটের ঘটনায় কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্তা নেই।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করমি। তিনি জানান, মূলত দৈনিক মানবজমিন ও নাগরিক টিভি’র চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও সাবেক জেলা যুবদলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া মেম্বারের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য এবং অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব চলে আসছে, যা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। আর সাংবাদিক ফারুক তার কয়েকজন সহকর্মীর গণমাধমে সুকৌশলে নিজেকে আড়াল করে এবং আওয়ামীগের তাণ্ডব বলে ফলাও করে সংবাদ পরিবেশন করেন। যা সম্পূর্ণ একপেশে এবং বস্তুনিষ্ঠ নয় বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, সাংবাদিক ফারুক তার নিজের অপরাধ আড়াল, পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং স্থানীয় নের্তৃত্ব এবং দাপট জিয়িয়ে রাখার জন্য অতিরঞ্জিত মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে পরিস্থিতি আরো উত্তেজিত করেছেন। তদন্তে দুপক্ষের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র কর্মী এবং সমর্থকদের জড়িতের সত্যতা পাওয়া গেছে, আর সেকারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইসলামপুর তেররশিয়া পোড়াগ্রামে ককটেল বিস্ফোরণ ও দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এটি কোন রাজনৈতিক সংঘাত বা সরকার বিরোধী অপচেষ্টা নয় বা আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র মধ্যে আধিপত্য কেন্দ্রিক সংঘষর্ও নয়। বালু ও মাটি কাটাকে কেন্দ্র করেই মুলত দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এরই জের ধরে দফায় দফায় দুই গ্রুপের সংর্ঘষ হয়। সবশেষ গত ১১ জুলাই ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এই দ্বন্দ্ব সংঘাতে একটি পক্ষে জিয়া মেম্বার এবং আরেকটি পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছে সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী। এর আগে গত ১৫ জুন সাংবাদিক ফারুকের নির্দেশে জিয়া পক্ষের শহিদুল ইসলামের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিক ফারুককে ১ নাম্বার আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এসব ককটেল বিষ্ফোরণ ও পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে থানায়। এসব মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপরাধীরা যেই রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, অভিযুক্ত সাংবাদিক ফারুক আহম্মেদ জানান, আমার প্রকাশিত সংবাদে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রের কোন কর্মকর্তা সেটির অপব্যাখ্যা করতে পারেন না। পুলিশ সুপার গণমাধ্যম্যের সামনে আমাকে ভিলেজ পলিটিক্সের একটি পক্ষের নেতা বানিয়ে দিলেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা আমার চাচা-চাচাতো ভাই। আমি তাদের নেতা নই বা ইসলামপুর ইউনিয়নের কোন বিষয়ে আমি সুবিধাভোগী বা গ্রাম্য রাজনীতিতে আমার কোন সম্পৃক্তা নেই।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ সুপারের বক্তব্যে একটিপক্ষ উৎসাহিত হবে। এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এর দায় কে নিবে?  সব অপরাধের খুঁটি রাজনীতি সেটি তিনি অস্বীকার করেছেন।
অপরদিকে, জিয়া মেম্বারকে এ ঘটনায় ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ছয় মাসেরও অধিক সময় ধরে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসছে ওই এলাকায়।