০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওঝার ঝাড়ফুঁকে ভরসা, প্রাণ গেল মকসেদুরের

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার চন্দনচহন (ঈদগাহ) গ্রামে বিষধর সাপের দংশনে মকসেদুর রহমান (১৯) নামে এক যুবকের করুণ মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের প্রাথমিক সিদ্ধান্তে চিকিৎসা না নিয়ে ওঝার শরণাপন্ন হওয়ার কারণে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৫ জুলাই ২০২৫) দুপুরে মকসেদুর তার বাবা হামিদুর রহমানের সঙ্গে পাটক্ষেতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি বিষাক্ত সাপ তাকে দংশন করে। কামড়ের পরপরই তার শরীরে বিষক্রিয়ার তীব্রতা দেখা দেয়।
তবে আশঙ্কাজনক অবস্থায়ও মকসেদুরকে হাসপাতালে না নিয়ে গ্রামীণ সংস্কারের নিয়ম মেনে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নেওয়া হয়। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে—হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
চোখের সামনে একজন তরুণের এমন করুণ পরিণতি দেখে হতবাক স্থানীয়রা। গ্রামের এক যুবক সুমন ইসলাম বলেন, “প্রযুক্তির এই যুগেও মানুষ এখনও ওঝা-ঝাড়ফুঁকের মতো কুসংস্কারে আস্থাশীল। সময়মতো চিকিৎসা পেলে ছেলেটি হয়তো আজও বেঁচে থাকত।”মকসেদুর রহমান ছিলেন একমাত্র পুত্র সন্তান। পরিবারের আশা-ভরসার কেন্দ্রবিন্দু এই তরুণের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানান, মকসেদুর ছিলেন নম্র, পরিশ্রমী ও সবার প্রিয় মুখ। তার এমন অনাকাঙ্ক্ষিত  মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের নিস্তব্ধতা।
এ ঘটনার পর এলাকার তরুণ সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামাজিক কার্যক্রম চালুর কথা বলছে। তারা মনে করেন, কুসংস্কারের বেড়াজাল ভাঙতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সচেতনতা—এই তিনের সমন্বয়ে মানুষকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলতে হবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিশুশ্রম নিরসনের বেশি প্রাধান্য দিবে -মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ওঝার ঝাড়ফুঁকে ভরসা, প্রাণ গেল মকসেদুরের

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার চন্দনচহন (ঈদগাহ) গ্রামে বিষধর সাপের দংশনে মকসেদুর রহমান (১৯) নামে এক যুবকের করুণ মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের প্রাথমিক সিদ্ধান্তে চিকিৎসা না নিয়ে ওঝার শরণাপন্ন হওয়ার কারণে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৫ জুলাই ২০২৫) দুপুরে মকসেদুর তার বাবা হামিদুর রহমানের সঙ্গে পাটক্ষেতে কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি বিষাক্ত সাপ তাকে দংশন করে। কামড়ের পরপরই তার শরীরে বিষক্রিয়ার তীব্রতা দেখা দেয়।
তবে আশঙ্কাজনক অবস্থায়ও মকসেদুরকে হাসপাতালে না নিয়ে গ্রামীণ সংস্কারের নিয়ম মেনে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নেওয়া হয়। সেখানেই দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ঝাড়ফুঁক। অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে—হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
চোখের সামনে একজন তরুণের এমন করুণ পরিণতি দেখে হতবাক স্থানীয়রা। গ্রামের এক যুবক সুমন ইসলাম বলেন, “প্রযুক্তির এই যুগেও মানুষ এখনও ওঝা-ঝাড়ফুঁকের মতো কুসংস্কারে আস্থাশীল। সময়মতো চিকিৎসা পেলে ছেলেটি হয়তো আজও বেঁচে থাকত।”মকসেদুর রহমান ছিলেন একমাত্র পুত্র সন্তান। পরিবারের আশা-ভরসার কেন্দ্রবিন্দু এই তরুণের মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানান, মকসেদুর ছিলেন নম্র, পরিশ্রমী ও সবার প্রিয় মুখ। তার এমন অনাকাঙ্ক্ষিত  মৃত্যুতে গোটা গ্রামে নেমে এসেছে শোকের নিস্তব্ধতা।
এ ঘটনার পর এলাকার তরুণ সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সামাজিক কার্যক্রম চালুর কথা বলছে। তারা মনে করেন, কুসংস্কারের বেড়াজাল ভাঙতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সচেতনতা—এই তিনের সমন্বয়ে মানুষকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলতে হবে।