০৯:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে প্রাচীন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

  • মোঃ আবু তাহের
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:২১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • 139
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া সদর থেকে ৫০০ গজ দূরে বালিয়াটি গ্রাম। এই গ্রামেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ সাতটি প্রাসাদ যা বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। উনিশ শতকে নির্মিত এসব প্রাসাদে আছে দুইশত বছরের পুরনো সব জিনিস। জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার গোবিন্দরাম সাহা। তিনি ছিলেন আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ের এক বড় মাপের লবণ ব্যাবসায়ী। তিনি চার ছেলেকে রেখে প্রায়াত হন। ধারণা করা হয় তার ছেলেরা বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ করেছে প্রাসাদ গুলো। এই প্রাসাদ ৫ দশমি ৮৮ একর জমির ওপর নির্মিত। এর ভেতরে রয়েছে দুই শতাধিক কক্ষবিশিষ্ট সাতটি ভবন। সামনের দিকে আছে চারটি পেছনের দিকে তিনটি পাশের পেছনে রয়েছে আনন্দমহল। এর উত্তর দিকে সাত ঘাটলা পুকুর। পুরো অংশের চারিদিক সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা দক্ষিণ প্রাচীরে পাশাপাশি একই ধরনের চারটি খিলান দরজা প্রতিটি দরজার ওপর একটি করে সিংহের মুর্তি। স্থাপনাগুলোর আকর্ষণীয় দিক হলো সারিবদ্ধ বিশাল আকৃতির করিনথিয়ান থাম, লোহার বিম, ঢালাই লোহার পেঁচানো সিড়ি, জানালায় রঙিন কাচ, কক্ষের অভ্যন্তরে বিশাল আকৃতির বেলজিয়াম আয়না, কারুকার্যখচিত দেয়াল ও মেঝেতে ঝাড়বাতি। পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় স্থাপনাটির দোতলার একটি অংশ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এই জাদুঘরের নিচের তলায় রয়েছে ১৫ টি লোহার সিন্দুক। এসব সিন্দুকে মূল্যবান দ্রব্য রাখতেন জমিদাররা। জাদুঘরের দুতলায় উঠলেই চোখে পড়ে কারুকার্যমন্ডিত রংমহল।বিশাল হলরুমসহ ওই রংমহলের সঙ্গে আরও পাঁচটি  কক্ষ। রংমহল এবং ওই সব কক্ষে  শোভা পাচ্ছে জমিদারদের ব্যবহৃত হারিকেন, হ্যাঁজাক বাতি, গ্রামোফোন বাক্স, ক্যাশ বাক্স, নামফলক, বদনা, ঝুলন্ত প্রদীপ, ঝাড়বাতি, পূজার আসন, পাথরের ছাইদানি, দেয়াল আয়না, কাঠের সিন্দুক, শ্বেতপাথরের গরু, কাঠের আলমারি, ফুলদানি, চেয়ার, আলনা পালল্কসহ সংগ্রহীত বিভিন্ন  প্রাচীন নিদর্শন। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত হচ্ছে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। রোববার ছাড়া পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘর খোলা থাকে। সোমবার খোলা থাকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা পাঁচ বছরের কম বয়সীরা টিকিট ছাড়াই প্রবেশ করতে পারে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কোথায় লড়বেন তারেক রহমান? বগুড়া, ঢাকা না সিলেট—ভোটের গুঞ্জন তুঙ্গে

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে প্রাচীন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি

পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:২১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া সদর থেকে ৫০০ গজ দূরে বালিয়াটি গ্রাম। এই গ্রামেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুউচ্চ সাতটি প্রাসাদ যা বালিয়াটি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। উনিশ শতকে নির্মিত এসব প্রাসাদে আছে দুইশত বছরের পুরনো সব জিনিস। জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার গোবিন্দরাম সাহা। তিনি ছিলেন আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ের এক বড় মাপের লবণ ব্যাবসায়ী। তিনি চার ছেলেকে রেখে প্রায়াত হন। ধারণা করা হয় তার ছেলেরা বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ করেছে প্রাসাদ গুলো। এই প্রাসাদ ৫ দশমি ৮৮ একর জমির ওপর নির্মিত। এর ভেতরে রয়েছে দুই শতাধিক কক্ষবিশিষ্ট সাতটি ভবন। সামনের দিকে আছে চারটি পেছনের দিকে তিনটি পাশের পেছনে রয়েছে আনন্দমহল। এর উত্তর দিকে সাত ঘাটলা পুকুর। পুরো অংশের চারিদিক সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা দক্ষিণ প্রাচীরে পাশাপাশি একই ধরনের চারটি খিলান দরজা প্রতিটি দরজার ওপর একটি করে সিংহের মুর্তি। স্থাপনাগুলোর আকর্ষণীয় দিক হলো সারিবদ্ধ বিশাল আকৃতির করিনথিয়ান থাম, লোহার বিম, ঢালাই লোহার পেঁচানো সিড়ি, জানালায় রঙিন কাচ, কক্ষের অভ্যন্তরে বিশাল আকৃতির বেলজিয়াম আয়না, কারুকার্যখচিত দেয়াল ও মেঝেতে ঝাড়বাতি। পশ্চিম দিক থেকে দ্বিতীয় স্থাপনাটির দোতলার একটি অংশ জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এই জাদুঘরের নিচের তলায় রয়েছে ১৫ টি লোহার সিন্দুক। এসব সিন্দুকে মূল্যবান দ্রব্য রাখতেন জমিদাররা। জাদুঘরের দুতলায় উঠলেই চোখে পড়ে কারুকার্যমন্ডিত রংমহল।বিশাল হলরুমসহ ওই রংমহলের সঙ্গে আরও পাঁচটি  কক্ষ। রংমহল এবং ওই সব কক্ষে  শোভা পাচ্ছে জমিদারদের ব্যবহৃত হারিকেন, হ্যাঁজাক বাতি, গ্রামোফোন বাক্স, ক্যাশ বাক্স, নামফলক, বদনা, ঝুলন্ত প্রদীপ, ঝাড়বাতি, পূজার আসন, পাথরের ছাইদানি, দেয়াল আয়না, কাঠের সিন্দুক, শ্বেতপাথরের গরু, কাঠের আলমারি, ফুলদানি, চেয়ার, আলনা পালল্কসহ সংগ্রহীত বিভিন্ন  প্রাচীন নিদর্শন। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত হচ্ছে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি। রোববার ছাড়া পাঁচ দিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘর খোলা থাকে। সোমবার খোলা থাকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা পাঁচ বছরের কম বয়সীরা টিকিট ছাড়াই প্রবেশ করতে পারে।