০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে পারিবারিক বিরোধে রক্তাক্ত প্রতিশোধ, কুপিয়ে হত্যা

  • tarak ahamed
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
  • 100
বরিশালের কাশিপুরে ভয়াবহ এক পারিবারিক বিরোধ রূপ নিয়েছে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বিল্লবাড়ি এলাকায় উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপস্থিতিতেই বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা লিটন সিকদার লিটুকে (৪২) নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত লিটু বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নজির সিকদারের ছেলে।
ঘটনার সূত্রপাত লিটুর বোন মুন্নি বেগম ও তার স্বামী জাকির গাজীর দাম্পত্য কলহ নিয়ে। জাকির গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করায় দাম্পত্য বিরোধ চরমে ওঠে এবং উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। বৃহস্পতিবার জামিনের পর পুলিশ প্রহরায় জাকির তার স্ত্রী মুন্নিকে নিয়ে বাড়িতে ফেরে। এ সময় পূর্বশত্রুতার জেরে এলাকার একদল লোক লিটুর পরিবারের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা লিটুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করে এবং তার ছোট ভাই সুমন (৩৫) ও বোন মুন্নি বেগমকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মুন্নি বেগম জানান, একই গ্রামের বাসিন্দা তার স্বামী জাকির হোসেন গাজী গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন। এ নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ হয়। সাম্প্রতি এ নিয়ে তিনি ও স্বামী পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। মামলার আসামি হিসেবে বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিনের পর তারা পুলিশ নিয়ে বাড়িতে আসেন। তখন পুলিশের সামনে বসে একদল লোক তাদের ওপর হামলা করে ঘরে ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে। এছাড়াও তার ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যাসহ তাদেরও কুপিয়ে আহত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, লিটুর এক হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও পরে ফিরে এসে লিটুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা পুনরায় লিটুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
স্থানীয়রা দাবি করেন, লিটু এলাকায় একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, চাঁদাবাজি এবং নানাবিধ অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এমনকি কিছুদিন আগে তিনি তার বোন জামাতা জাকিরকে গোপনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দিয়ে নির্যাতন করেন বলে জানা গেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে হামলাকারী পরিবারের সম্পৃক্ততা থাকায় রাজনৈতিক উত্তাপও দেখা দিয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেনি।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির শিকদার জানিয়েছেন, “এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কোথায় লড়বেন তারেক রহমান? বগুড়া, ঢাকা না সিলেট—ভোটের গুঞ্জন তুঙ্গে

বরিশালে পারিবারিক বিরোধে রক্তাক্ত প্রতিশোধ, কুপিয়ে হত্যা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:০৩:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
বরিশালের কাশিপুরে ভয়াবহ এক পারিবারিক বিরোধ রূপ নিয়েছে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বিল্লবাড়ি এলাকায় উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপস্থিতিতেই বহিষ্কৃত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা লিটন সিকদার লিটুকে (৪২) নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত লিটু বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নজির সিকদারের ছেলে।
ঘটনার সূত্রপাত লিটুর বোন মুন্নি বেগম ও তার স্বামী জাকির গাজীর দাম্পত্য কলহ নিয়ে। জাকির গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করায় দাম্পত্য বিরোধ চরমে ওঠে এবং উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। বৃহস্পতিবার জামিনের পর পুলিশ প্রহরায় জাকির তার স্ত্রী মুন্নিকে নিয়ে বাড়িতে ফেরে। এ সময় পূর্বশত্রুতার জেরে এলাকার একদল লোক লিটুর পরিবারের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা লিটুকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে রক্তাক্ত করে এবং তার ছোট ভাই সুমন (৩৫) ও বোন মুন্নি বেগমকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মুন্নি বেগম জানান, একই গ্রামের বাসিন্দা তার স্বামী জাকির হোসেন গাজী গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন। এ নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ হয়। সাম্প্রতি এ নিয়ে তিনি ও স্বামী পাল্টাপাল্টি মামলা করেন। মামলার আসামি হিসেবে বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিনের পর তারা পুলিশ নিয়ে বাড়িতে আসেন। তখন পুলিশের সামনে বসে একদল লোক তাদের ওপর হামলা করে ঘরে ভাংচুর ও আগুন দিয়েছে। এছাড়াও তার ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যাসহ তাদেরও কুপিয়ে আহত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, লিটুর এক হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও পরে ফিরে এসে লিটুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজিত জনতা পুনরায় লিটুকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
স্থানীয়রা দাবি করেন, লিটু এলাকায় একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে, চাঁদাবাজি এবং নানাবিধ অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এমনকি কিছুদিন আগে তিনি তার বোন জামাতা জাকিরকে গোপনাঙ্গে বিদ্যুৎ শক দিয়ে নির্যাতন করেন বলে জানা গেছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে হামলাকারী পরিবারের সম্পৃক্ততা থাকায় রাজনৈতিক উত্তাপও দেখা দিয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেনি।
এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির শিকদার জানিয়েছেন, “এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”