০৫:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নান্দাইলে জোর পূর্বক জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি আশঙ্কা

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রুহুল আমিন (৬৫) কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগে উঠে এসেছে, গত ১৬ জুন সকাল ১০টার দিকে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জোরপূর্বক তাঁর দখলে থাকা জমিতে প্রবেশ করে ঘর নির্মাণ ও গাছ রোপণের চেষ্টা চালায়।
ভুক্তভোগী রুহুল আমিন ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, হালিউড়া মৌজার খতিয়ান নং ৮১৬, দাগ নং ১০০১ ও ১০০৪, জে.এল. নং ৬৬, শ্রেণি “কান্দা” জমির পরিমাণ ৭৩ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে এই জমির ভোগদখলে থাকার পরেও নিজ গ্রামের প্রতিবেশী- গোলাম রহমান (গোলাপ), জহিরুল ইসলাম, আবু কালাম, আছমা আক্তার, শিরিন আক্তার, হিরা মিয়া, নয়ন মিয়া, খোকন মিয়াসহ আরও কয়েকজন—দলবদ্ধভাবে জমিতে হামলা চালিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে।
রুহুল আমিন বলেন, তিনি ও তাঁর স্বজনরা বাধা দিতে গেলে অভিযুক্তরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর ফলে এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২৯ শে জুলাই ঘটনার বিষয় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, প্রায় ২০ বছর আগে মানবিক বিবেচনায় নিজের জায়গার একটি অংশে স্থানীয় তোতা মিয়া ও তার পরিবারকে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেন তিনি।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গোলাপ মিয়া গং ওই জায়গার আরও অংশ দখলের চেষ্টা শুরু করে। বাধা দিলে তারা আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তে এবং থানা কর্তৃপক্ষের তলবে কাগজপত্র চাওয়া হলে গোলাপ মিয়া পক্ষ কোনো বৈধ দলিল দেখাতে পারেনি। এক পর্যায়ে আদালত রুহুল আমিনের পক্ষে রায় প্রদান করে এবং মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
রুহুল আমিন জানান, কিছুদিন শান্ত থাকার পর গত ১৬ জুলাই গোলাপ মিয়া গং পুনরায় প্রভাবশালী মহলের মদদে সেই জমি দখলের চেষ্টা চালায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাপ মিয়ার মা সোলেমা খাতুন জানান, “আমার স্বামী এখানে থাকার ব্যবস্থা করে গেছেন, তাই এখানেই থাকি।” তবে জায়গার বৈধ কাগজপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান, রাহাত সরকার ও ফারুক মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানান, জমির মালিকপক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করলেও হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
রুহুল আমিন ইতোমধ্যে নান্দাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে নান্দাইল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) জানান।
তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী বিষয়টি স্থানীয়ভাবে গভীর উদ্বেগ ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার দাবি করছেন এলাকাবাসী।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কোথায় লড়বেন তারেক রহমান? বগুড়া, ঢাকা না সিলেট—ভোটের গুঞ্জন তুঙ্গে

নান্দাইলে জোর পূর্বক জমি দখল নিয়ে উত্তেজনা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি আশঙ্কা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৫৮:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের হালিউড়া গ্রামে জমি দখলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রুহুল আমিন (৬৫) কর্তৃক দায়েরকৃত অভিযোগে উঠে এসেছে, গত ১৬ জুন সকাল ১০টার দিকে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জোরপূর্বক তাঁর দখলে থাকা জমিতে প্রবেশ করে ঘর নির্মাণ ও গাছ রোপণের চেষ্টা চালায়।
ভুক্তভোগী রুহুল আমিন ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, হালিউড়া মৌজার খতিয়ান নং ৮১৬, দাগ নং ১০০১ ও ১০০৪, জে.এল. নং ৬৬, শ্রেণি “কান্দা” জমির পরিমাণ ৭৩ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে এই জমির ভোগদখলে থাকার পরেও নিজ গ্রামের প্রতিবেশী- গোলাম রহমান (গোলাপ), জহিরুল ইসলাম, আবু কালাম, আছমা আক্তার, শিরিন আক্তার, হিরা মিয়া, নয়ন মিয়া, খোকন মিয়াসহ আরও কয়েকজন—দলবদ্ধভাবে জমিতে হামলা চালিয়ে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে।
রুহুল আমিন বলেন, তিনি ও তাঁর স্বজনরা বাধা দিতে গেলে অভিযুক্তরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জমি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর ফলে এলাকাজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গত ২৯ শে জুলাই ঘটনার বিষয় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুক্তভোগী মোঃ রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, প্রায় ২০ বছর আগে মানবিক বিবেচনায় নিজের জায়গার একটি অংশে স্থানীয় তোতা মিয়া ও তার পরিবারকে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেন তিনি।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গোলাপ মিয়া গং ওই জায়গার আরও অংশ দখলের চেষ্টা শুরু করে। বাধা দিলে তারা আদালতে মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তে এবং থানা কর্তৃপক্ষের তলবে কাগজপত্র চাওয়া হলে গোলাপ মিয়া পক্ষ কোনো বৈধ দলিল দেখাতে পারেনি। এক পর্যায়ে আদালত রুহুল আমিনের পক্ষে রায় প্রদান করে এবং মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
রুহুল আমিন জানান, কিছুদিন শান্ত থাকার পর গত ১৬ জুলাই গোলাপ মিয়া গং পুনরায় প্রভাবশালী মহলের মদদে সেই জমি দখলের চেষ্টা চালায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাপ মিয়ার মা সোলেমা খাতুন জানান, “আমার স্বামী এখানে থাকার ব্যবস্থা করে গেছেন, তাই এখানেই থাকি।” তবে জায়গার বৈধ কাগজপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান, রাহাত সরকার ও ফারুক মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানান, জমির মালিকপক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করলেও হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
রুহুল আমিন ইতোমধ্যে নান্দাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে নান্দাইল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) জানান।
তিনি বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী বিষয়টি স্থানীয়ভাবে গভীর উদ্বেগ ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার দাবি করছেন এলাকাবাসী।