০১:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্ধত্বে আচ্ছন্ন তিন জীবনের করুণ গল্প: মানবিক সহায়তার আহ্বান

  • Nasir Mahmud
  • পোস্ট হয়েছেঃ ১২:৫৬:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • 28

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকুরি মধ্যপাড়া গ্রামে বাস করে এক অসহায় পরিবার, যেখানে তিন ভাই-বোন জন্ম থেকেই অন্ধ। মৃত আফতাব উদ্দিন সাহার এই সন্তানরা পৃথিবীর আলো কখনোই দেখেনি, চেনেন না নিজের মা-বাবার মুখ, এমনকি নিজেদের চেহারাও তারা কখনো দেখতে পাননি। আলো-হাওয়াবিহীন অন্ধকার জীবনে তারা লড়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

এ বিষয়ে পরিবারের সদস্য আব্দুল লতিফ বলেন, “আমরা পাঁচ ভাই তিন বোন। এর মধ্যে আমরা দুই ভাই ও এক বোন অন্ধ। ছোটবেলা থেকেই চোখে কিছু দেখি না। বাবা-মার মুখ দেখা হয়নি। চলাফেরা করতে কষ্ট হয়, অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানো আরও কঠিন। মানুষের সহানুভূতিতেই আমাদের জীবন চলে। চিকিৎসা করাবো, নাকি পেটে ভাত দেব—এই দোটানায় পড়ে থাকি।”
অন্ধ রবিউলের বোন জানান, “আমরা তিন ভাইবোন একসাথে থাকি, একসাথেই খাই। প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে কোনো রকমে চলে। আমার এক ভাই বিয়ে করেছে, ভাবি রান্না করে দেন। কোনো দিন খাওয়া হয়, কোনো দিন না খেয়ে কাটে।”
অন্ধ রবিউল বলেন, “আমার দুই ছেলে আমাকে সাহায্য করে চলতে। কারও কথা শুনি, কিন্তু কে বলছে, তা দেখতে পাই না। বাবা-মার মুখও কোনোদিন দেখি নাই।”
রবিউলের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী, তার ভাই ও বোন—তিনজনই অন্ধ। তাদের খাওয়া, চিকিৎসা, সবকিছুই আমি করি। কেউ অসুস্থ হলে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতে হয়। আমি একা সামলাতে পারি না। সরকারের কাছে, সমাজের বিত্তবানদের কাছে আবেদন—আমার এই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। সামান্য সহায়তায়ও তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও এই পরিবারটির দুঃখ-কষ্টের কথা জানেন। একজন বলেন, “তারা ছোটবেলা থেকেই অন্ধ। চলাফেরা খুব কষ্টের। আরেকজন বলেন, “অনেক সময় না খেয়ে দিন কাটে। সবাই যদি সাহায্য করে, তাহলে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।”
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

সীতাকুণ্ডে ভাষানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা নারী-শিশুসহ ৪০ রোহিঙ্গা আটক

অন্ধত্বে আচ্ছন্ন তিন জীবনের করুণ গল্প: মানবিক সহায়তার আহ্বান

পোস্ট হয়েছেঃ ১২:৫৬:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকুরি মধ্যপাড়া গ্রামে বাস করে এক অসহায় পরিবার, যেখানে তিন ভাই-বোন জন্ম থেকেই অন্ধ। মৃত আফতাব উদ্দিন সাহার এই সন্তানরা পৃথিবীর আলো কখনোই দেখেনি, চেনেন না নিজের মা-বাবার মুখ, এমনকি নিজেদের চেহারাও তারা কখনো দেখতে পাননি। আলো-হাওয়াবিহীন অন্ধকার জীবনে তারা লড়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

এ বিষয়ে পরিবারের সদস্য আব্দুল লতিফ বলেন, “আমরা পাঁচ ভাই তিন বোন। এর মধ্যে আমরা দুই ভাই ও এক বোন অন্ধ। ছোটবেলা থেকেই চোখে কিছু দেখি না। বাবা-মার মুখ দেখা হয়নি। চলাফেরা করতে কষ্ট হয়, অসুস্থ হলে চিকিৎসা করানো আরও কঠিন। মানুষের সহানুভূতিতেই আমাদের জীবন চলে। চিকিৎসা করাবো, নাকি পেটে ভাত দেব—এই দোটানায় পড়ে থাকি।”
অন্ধ রবিউলের বোন জানান, “আমরা তিন ভাইবোন একসাথে থাকি, একসাথেই খাই। প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে কোনো রকমে চলে। আমার এক ভাই বিয়ে করেছে, ভাবি রান্না করে দেন। কোনো দিন খাওয়া হয়, কোনো দিন না খেয়ে কাটে।”
অন্ধ রবিউল বলেন, “আমার দুই ছেলে আমাকে সাহায্য করে চলতে। কারও কথা শুনি, কিন্তু কে বলছে, তা দেখতে পাই না। বাবা-মার মুখও কোনোদিন দেখি নাই।”
রবিউলের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী, তার ভাই ও বোন—তিনজনই অন্ধ। তাদের খাওয়া, চিকিৎসা, সবকিছুই আমি করি। কেউ অসুস্থ হলে মানুষের কাছে হাত পেতে টাকা চাইতে হয়। আমি একা সামলাতে পারি না। সরকারের কাছে, সমাজের বিত্তবানদের কাছে আবেদন—আমার এই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। সামান্য সহায়তায়ও তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারব।”
স্থানীয় বাসিন্দারাও এই পরিবারটির দুঃখ-কষ্টের কথা জানেন। একজন বলেন, “তারা ছোটবেলা থেকেই অন্ধ। চলাফেরা খুব কষ্টের। আরেকজন বলেন, “অনেক সময় না খেয়ে দিন কাটে। সবাই যদি সাহায্য করে, তাহলে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।”