০৬:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁয়ে জমি দখল ও লুটপাটের অভিযোগে আলোচনায় জুলফিকার স্টিল মিলের মালিক

Oplus_131072

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় গাউছিয়া-মদনপুর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে চেংগাইন মৌজায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত জুলফিকার স্টিল মিলের মালিক মাহবুব রশিদ জুয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সোনারগাঁয়ের নলাটি এলাকায় তার মালিকানাধীন জমিতে সম্প্রতি জুয়েল ও তার লোকজন বালু ফেলে জোরপূর্বক ভরাট শুরু করে। দখল প্রক্রিয়ার সময় জমিতে থাকা কোটি টাকার মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এছাড়া হামলার মাধ্যমে চাঁদা হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মাহবুব রশিদ জুয়েল ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী সাবেক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, সোনারগাঁ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মামলা দায়ের করেন আবদুল হামিদ। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন সোনারগাঁ থানা পুলিশকে।
তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম সরেজমিন তদন্তে গেলে অভিযোগকারী তার সামনেই হেনস্তার শিকার হন বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের প্রশ্ন—আইনের উপস্থিতিতেও যদি ভুক্তভোগী নিরাপদ না থাকেন, তাহলে প্রভাবশালীরা এত সাহস পায় কোথা থেকে?
স্থানীয়দের মতে, মাহবুব রশিদ জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের জমি দখলে জড়িত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে হাসান কেমিক্যাল, লিপি পেপার মিলসহ একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “জুয়েল বাহিনী যেকোনো বিরোধিতার মুখে হামলা ও হুমকির আশ্রয় নেয়। আমরা নিজেদের এলাকাতেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং আদালতের নির্দেশের পরও হেনস্তার অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। জমির প্রকৃত মালিকানা, দখল সংক্রান্ত অভিযোগ এবং ঘটনাস্থলে সংঘটিত ঘটনার যথাযথ তদন্ত চলছে। কেউ হেনস্তার শিকার হয়ে থাকলে সেটিও তদন্তের আওতায় আনা হবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত মাহবুব রশিদ জুয়েলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
তদন্ত চলমান থাকলেও প্রশ্ন উঠছে—রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা প্রভাবশালী দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

শরণখোলায় এইচএসসি পরীক্ষার ভেন্যু পরিবর্তনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

সোনারগাঁয়ে জমি দখল ও লুটপাটের অভিযোগে আলোচনায় জুলফিকার স্টিল মিলের মালিক

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:২৪:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় গাউছিয়া-মদনপুর এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের পাশে চেংগাইন মৌজায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত জুলফিকার স্টিল মিলের মালিক মাহবুব রশিদ জুয়েল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আবদুল হামিদ।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, সোনারগাঁয়ের নলাটি এলাকায় তার মালিকানাধীন জমিতে সম্প্রতি জুয়েল ও তার লোকজন বালু ফেলে জোরপূর্বক ভরাট শুরু করে। দখল প্রক্রিয়ার সময় জমিতে থাকা কোটি টাকার মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এছাড়া হামলার মাধ্যমে চাঁদা হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, মাহবুব রশিদ জুয়েল ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী সাবেক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, সোনারগাঁ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মামলা দায়ের করেন আবদুল হামিদ। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন সোনারগাঁ থানা পুলিশকে।
তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম সরেজমিন তদন্তে গেলে অভিযোগকারী তার সামনেই হেনস্তার শিকার হন বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের প্রশ্ন—আইনের উপস্থিতিতেও যদি ভুক্তভোগী নিরাপদ না থাকেন, তাহলে প্রভাবশালীরা এত সাহস পায় কোথা থেকে?
স্থানীয়দের মতে, মাহবুব রশিদ জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের জমি দখলে জড়িত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে হাসান কেমিক্যাল, লিপি পেপার মিলসহ একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “জুয়েল বাহিনী যেকোনো বিরোধিতার মুখে হামলা ও হুমকির আশ্রয় নেয়। আমরা নিজেদের এলাকাতেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার মতো স্পর্শকাতর ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং আদালতের নির্দেশের পরও হেনস্তার অভিযোগ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। জমির প্রকৃত মালিকানা, দখল সংক্রান্ত অভিযোগ এবং ঘটনাস্থলে সংঘটিত ঘটনার যথাযথ তদন্ত চলছে। কেউ হেনস্তার শিকার হয়ে থাকলে সেটিও তদন্তের আওতায় আনা হবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত মাহবুব রশিদ জুয়েলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
তদন্ত চলমান থাকলেও প্রশ্ন উঠছে—রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা প্রভাবশালী দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।