
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি পৌরসভার নাগরিক সেবা কার্যক্রমে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ২০০৪ সালে বাঘাইছড়ি পৌরসভা হিসেবে ঘোষিত হলেও এখানে জনসেবামূলক কার্যক্রম প্রায় নেই বললেই চলে। বিশেষ করে ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় রয়েছে চরম অব্যবস্থা ও অনিয়ম।
সাম্প্রতিক ঈদুল ফিতরের আগে পৌর এলাকার চৌমুহনী বাজারে একদিন ময়লা পরিষ্কার করতে দেখা যায় পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। তবে কাজটি নিয়মিত কিংবা পরিকল্পিত ছিল না, ছিল একদিনের লোকদেখানো উদ্যোগ। পরিষ্কারের পরপরই কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে বাজারের বিভিন্ন দোকানে গিয়ে “ঈদ বোনাস” দাবি করতে দেখা যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—এটি বোনাস নয়, চাঁদাবাজির শামিল। কারণ, এরা সবাই পৌরসভার বেতনভুক্ত কর্মচারী।
আজ আবার কিছু অংশে ময়লা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে, তবে সব দোকানের সামনের আবর্জনা অপসারণ করা হয়নি। কোথাও কোথাও আগের ময়লা রেখে গিয়েছে গার্বেজ ট্রাক। তিন মাস পর আকস্মিক এই পরিষ্কার অভিযান কেন চালানো হলো, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এই দীর্ঘ সময় ধরে চৌমুহনী বাজার ও আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকানের সামনের ময়লা নিজেরাই সরিয়ে ফেলছেন। কেউ রাস্তার পাশে, কেউবা সরাসরি পুকুরে ফেলে দিচ্ছেন। ফলে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
পৌর এলাকা হিসেবে বাঘাইছড়ির পরিবেশ অন্য এলাকার চেয়ে উন্নত হওয়া উচিত। এখানকার প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত তদারকি থাকা আবশ্যক। জনস্বার্থে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য নির্দিষ্ট আবর্জনা ফেলার স্থান নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি ময়লা-আবর্জনা পরিবেশবান্ধব উপায়ে ব্যবস্থাপনার জন্য রিসাইক্লিং ব্যবস্থা চালু করা জরুরি।
স্থানীয় নাগরিকদের প্রশ্ন—পৌরসভার গঠনের এতদিন পরও কেন এমন নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে? সময় এসেছে প্রশাসনের ঘুম ভাঙানোর। জনসেবাকে মুখ্য করে একটি কার্যকর পৌরসভা গঠনে পদক্ষেপ নেওয়া এখনই জরুরি।