
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শাহাজান আলী ও আসলাম নামের দুইজন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে নাছিমা খাতুন নামের এক নারী মৎস উদ্দোক্তা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
১৭ (জুন) বেলা ১২ টায় ক্ষেতলাল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী বলেন: “আমি মোছাঃ নাছিমা খাতুন, স্বামী: শারফুল ইসলাম, গ্রাম: রাণীপুকুর, রামপুরা, উপজেলা: ক্ষেতলাল, জেলা: জয়পুরহাট। আমরা পেশায় মৎস্যজীবী এবং দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কুনিয়াপাড়া গ্রামের শাহাজান আলী ও আসলামের কাছ থেকে সরকারি খাস পুকুর সাব-লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছি।
গত অষাঢ় মাসে মেয়াদ শেষ হওয়ার অজুহাতে শাহাজান আলী আমাদের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি হুমকি দেন, টাকা না দিলে আমাদের চাষ করা পুকুর অন্য কাউকে দিয়ে দেবেন। পুকুরে তখন কয়েক লক্ষ টাকার মাছ থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে এনজিও ও দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে চাঁদার টাকা পরিশোধ করি। এই লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথনের অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।
পরবর্তীতে ২৫/০৫/২০২৫ তারিখে শাহাজান আলী আবারো ৬০,০০০ টাকা অতিরিক্ত চাঁদা দাবি করেন এবং তা না দিলে মাছ ধরতে বাধা দেবেন বলে হুমকি দেন। আমরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি ও তার সহযোগীরা দলবদ্ধভাবে আমাদের পুকুরে মাছ ধরতে শুরু করে। আমরা বাধা দিতে গেলে আমার স্বামীকে তারা বেধড়ক মারধর করে এবং আমাকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। স্থানীয় লোকজন আমাদের উদ্ধার করে ক্ষেতলাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
২৮/০৫/২০২৫ তারিখে আমি ক্ষেতলাল থানায় মামলা করতে গেলে ডিউটি অফিসার জানান, এই ব্যাক্তিরা থানায় প্রভাবশালী, আপনাকে কোনো সহযোগিতা দেওয়া যাবে না, কোর্টে যান। পরে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি এবং আদালত মামলাটি পিবিআই (PBI)-কে তদন্তের আদেশ দেন।
এরপর ০৪/০৬/২০২৫ তারিখে আমার স্বামী জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে কুনিয়াপাড়া মৎস্য সমবায় সমিতি বাতিলের দাবিতে লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শাহাজান আলী ও আসলাম তাকে রাস্তায় আটকিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দেন। অভিযোগ না তোলায় ০৯/০৬/২০২৫ তারিখে পুনরায় তারা আমার স্বামীকে মারধর করেন। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং সেদিনই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি, যা গ্রহণ করা হয়।
দুঃখজনক বিষয় আজ পর্যন্ত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং আমরা পরিবারসহ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি।আমরা সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার (জয়পুরহাট), সেনা ক্যাম্প জয়পুরহাট এবং ক্ষেতলাল উপজেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি সিন্ডিকেটকারী শাহাজান আলী ও আসলামের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। অবৈধভাবে পরিচালিত কুনিয়াপাড়া মৎস্য সমবায় সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।