০৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চেকপোস্টে ধাক্কা খেয়ে ট্রাকচাপায় পা হারালেন কনস্টেবল

রবিবার ভোরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতির হাজী রাস্তার মাথা এলাকায় পুলিশ বসিয়েছিল চেকপোস্ট। লক্ষ্য—মোটরসাইকেলে ইয়াবা পাচার ঠেকানো। কিন্তু মুহূর্তেই সেই অভিযান রূপ নেয় এক করুণ দৃশ্যপটে। সকাল পৌনে ছয়টার দিকে একটি মোটরসাইকেল চেকপোস্টের সংকেত অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করে। পেছনে আরও একটি বাইক। পুলিশ সদস্যরা দ্বিতীয় বাইকটিকে থামাতে দৌঁড়ে গেলে এক সদস্য ধাক্কা দেন পেছনে বসা যুবককে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি পাশে পড়ে যায়—আর ওই সময়ই আরেক পুলিশ সদস্য ছুটে গিয়ে মোটরসাইকেল চালককে থামাতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা ধীরগতির একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন তিনি। দৃশ্যটি ধরা পড়ে ৫৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে, যা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাকের নিচে চাপা পড়া পুলিশ সদস্য ছিলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাতেই অস্ত্রোপচারে তার ডান পা গোড়ালি থেকে কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন ও আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) মো. তফিকুল আলম বলেন, “মোটরসাইকেলে করে ইয়াবা পাচারের তথ্যের ভিত্তিতে মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল। চেকপোস্ট ভেঙে পালানোর সময় পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন দুর্ঘটনার শিকার হন।” এ ঘটনায় আরও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয়। পরে লোহাগাড়া থানায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এসআই মো. শরিফুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়: ট্রাকচালক মো. শহিদুল ইসলাম (২৬), হেলপার আলী হায়দার (২০), মোটরসাইকেল চালক ওমর ফারুক তৌহিদ (২৩) এবং আরোহী মো. হাসান (২৪)। সোমবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, “আহত কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। রাতেই অস্ত্রোপচার করে তা কেটে ফেলতে হয়।” ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে—চেকপোস্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং দায়িত্ব পালনের ঝুঁকি নিয়ে। লোহাগাড়া থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, “ভিডিওটি আমরাও দেখেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত ছাড়া এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।”

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কুমিল্লা পাঠশালা কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দোয়া ও বিদায় অনুষ্ঠান

চেকপোস্টে ধাক্কা খেয়ে ট্রাকচাপায় পা হারালেন কনস্টেবল

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:১৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

রবিবার ভোরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতির হাজী রাস্তার মাথা এলাকায় পুলিশ বসিয়েছিল চেকপোস্ট। লক্ষ্য—মোটরসাইকেলে ইয়াবা পাচার ঠেকানো। কিন্তু মুহূর্তেই সেই অভিযান রূপ নেয় এক করুণ দৃশ্যপটে। সকাল পৌনে ছয়টার দিকে একটি মোটরসাইকেল চেকপোস্টের সংকেত অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করে। পেছনে আরও একটি বাইক। পুলিশ সদস্যরা দ্বিতীয় বাইকটিকে থামাতে দৌঁড়ে গেলে এক সদস্য ধাক্কা দেন পেছনে বসা যুবককে। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি পাশে পড়ে যায়—আর ওই সময়ই আরেক পুলিশ সদস্য ছুটে গিয়ে মোটরসাইকেল চালককে থামাতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা ধীরগতির একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়েন তিনি। দৃশ্যটি ধরা পড়ে ৫৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে, যা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাকের নিচে চাপা পড়া পুলিশ সদস্য ছিলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রাতেই অস্ত্রোপচারে তার ডান পা গোড়ালি থেকে কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন ও আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) মো. তফিকুল আলম বলেন, “মোটরসাইকেলে করে ইয়াবা পাচারের তথ্যের ভিত্তিতে মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়েছিল। চেকপোস্ট ভেঙে পালানোর সময় পুলিশ সদস্য আলাউদ্দিন দুর্ঘটনার শিকার হন।” এ ঘটনায় আরও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, তবে তাদের আঘাত গুরুতর নয়। পরে লোহাগাড়া থানায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এসআই মো. শরিফুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়: ট্রাকচালক মো. শহিদুল ইসলাম (২৬), হেলপার আলী হায়দার (২০), মোটরসাইকেল চালক ওমর ফারুক তৌহিদ (২৩) এবং আরোহী মো. হাসান (২৪)। সোমবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, “আহত কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। রাতেই অস্ত্রোপচার করে তা কেটে ফেলতে হয়।” ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে—চেকপোস্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রস্তুতি এবং দায়িত্ব পালনের ঝুঁকি নিয়ে। লোহাগাড়া থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, “ভিডিওটি আমরাও দেখেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত ছাড়া এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।”