
মাত্র মাঝারি মাত্রার এক বৃষ্টিতেই অচল হয়ে পড়ে বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো। সাতমাথা মোড়, সেউজগাড়ি, টিনপট্টি, নারুলী, ঠনঠনিয়া, বনানী ও বড়গোলা ধাওয়া পাড়া, নাটাই পাড়া মালতী নগর এলাকায় কোমরসমান পানি জমে তৈরি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। রাস্তায় রিকশা, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন থেমে যায়। হাঁটুজলে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও সাধারণ পথচারীদের। শহরের কিছু ব্যাবসায়ী বলেন যে “বর্ষা এলেই মনে হয় দোকান নয়, পানির ভেতর ব্যবসা করছি। নালার ময়লা পানিতে দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে।” নারুলী ধাওয়া পাড়া নাটাই পাড়া এলাকার কিছু বাসিন্দার সাথে কথা বলতে গেলে তারা জানান আমাদের “বাসা থেকে বাজারের দূরত্ব মাত্র ৫ মিনিটের হাঁটা। কিন্তু রাস্তা পানিতে ডুবে যাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে হাসপাতালে নেওয়াটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।” ৪০০ কিলোমিটার ড্রেন অচল অবস্থায় পৌরসভার তথ্য মতে, শহরে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার ড্রেন থাকলেও অন্তত ৪০০ কিলোমিটার ড্রেন ভরাট, ভাঙা বা ময়লায় বন্ধ। পুরোনো ওয়ার্ডগুলোর ড্রেনের প্রস্থ মাত্র দুই ফুট, যা আধুনিক শহরের জন্য একেবারেই অপ্রতুল।
পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনবল ও বাজেট সীমাবদ্ধতার কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, ড্রেনেজ উন্নয়নের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও কাজের সঠিক বাস্তবায়ন হয় না।
নির্বাহী প্রকৌশলীর দাবি, পরিকল্পনায় আছি! পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, “বৃষ্টির পরপরই আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করি। ধাপে ধাপে কাজ করা হচ্ছে।” অপরদিকে পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ জানান, “পুরোনো ড্রেন গুলোর আধুনিকায়ন জরুরি। কিন্তু সীমিত বাজেট বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।” স্থানীয়দের দাবি: কথার ফুলঝুরি নয়, দরকার বাস্তব কাজ সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযানের জেলা সম্পাদক কেজিএম ফারুক বলেন, “পরিকল্পিত ড্রেন ব্যবস্থা, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পৌরসভার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে, প্রতিবছর এমন দুর্ভোগ চলতেই থাকবে।” বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষা এলেই ভয় আর উৎকণ্ঠা ঘিরে ধরে। পৌরসভার আশ্বাস শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তব পরিবর্তন নেই বললেই চলে।