
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের নিজবানাইল গ্রামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী তাণ্ডব ও ভূমি দখলের ঘটনায় নিরীহ একটি পরিবার গত তিন মাস ধরে ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। অভিযুক্তরা একই গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমি দস্যু শাহীন, তুহিন ও বায়েজিদ। স্থানীয়রা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মতো নানা অপরাধে লিপ্ত। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মরহুম হাবিবুল্লাহ আকন্দের উত্তরসূরিরা তাদের নিজ বসতভিটায় বসবাস করতেন। কিন্তু অভিযুক্ত চক্রের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় তারা হামলা ও মারধরের মাধ্যমে পরিবারটিকে জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করে দেয় এবং বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এমনকি ঈদুল আযহার দিনেও পরিবারটির সদস্যরা বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি। বর্তমানে বাড়ীটিতে লোকজন না থাকায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তাদের ফসলি জমিতে চাষাবাদে বাধা, ফলজ গাছ ও পুকুরের মাছ লুটসহ বিভিন্নভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ লক্ষাধিক টাকা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
নির্যাতিত পরিবারের সদস্য মো. ছায়েদুর রহমান জানান, “তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে আমরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাড়িতে যেতে পারছি না। তারা খুন ও অপহরণের হুমকি দিচ্ছে।” তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ঘটনায় ১৬ নম্বর একটি মামলা (জিআর নং-১২৪/২৪) নান্দাইল মডেল থানায় দায়ের করা হলেও অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত হয়ে আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। গত ১৫ জুলাই, মঙ্গলবার দুপুরে পৌরসভার সামনে হাবিবুল্লাহ আকন্দের কনিষ্ঠ পুত্র মো. জিয়াউর রহমানকে মোটরসাইকেলের চাকায় পিষ্ট করে হত্যাচেষ্টা চালায় বায়েজিদ। জিয়াউর দ্রুত দৌঁড়ে পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান। এদিকে, জমির বর্গাচাষি নূর উদ্দিন জানান, “আমি আমন ধান চাষের জন্য জমিতে কাজ করতে গেলে তারা আমাকে মারধরের হুমকি দেয় এবং জানায়, আর কোনোদিন জমিতে গেলে হাত-পা কেটে ফেলবে।”
অদ্য ১৬ জুলাই ২০২৫ তারিখ সকালে ঘটনার বিষয় অনুসন্ধানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্ত শাহীন, তুহিন ও বায়েজিদ সাংবাদিকদের সঙ্গে অপমানজনক ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তবে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এলাকাবাসী ও নির্যাতিত পরিবার প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই নিরীহ পরিবারটির পক্ষে নিজেদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসা অসম্ভব বলে মনে করছেন অনেকেই।