
ঢাকা, ৭ এপ্রিল: গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আয়োজিত ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে চাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে জোরপূর্বক অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে বিএমইউ-তে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম অধ্যাপক ডা. সুলতানা আলগিন, যিনি মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেই গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে। কিন্তু ম্যাম স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ক্লাসে অংশ না নিলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। ফলে অনেকেই বাধ্য হয়ে ক্লাসে উপস্থিত হন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নির্দেশনা অনুযায়ী, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়। তবে অধ্যাপক আলগিন ওই নির্দেশনা অমান্য করে এমডি কোর্সের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকতে বলেন এবং অনুপস্থিত থাকলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ কিংবা ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষার্থী।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, অধ্যাপক আলগিন সরকারঘনিষ্ঠ চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর সক্রিয় সদস্য। অতীতেও তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অংশগ্রহণ করানোর অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, “একজন শিক্ষকের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের মানসিক ও একাডেমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কিংবা ধর্মীয় বৈষম্যমূলক আচরণ একটি গণতান্ত্রিক শিক্ষা পরিবেশের পরিপন্থী। যখন কোনো শিক্ষক তার ব্যক্তিগত মতাদর্শ, রাজনৈতিক পরিচয় বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার হরণ করেন, তখন তা শুধু শিক্ষার্থী নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”