
গত ২৪ এপ্রিল উদ্ধোধনের পর থেকে অদ্যাবধি নানামুখী অসুবিধা নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ফেরী ”কপোতাক্ষ”। সদ্বীপবাসীর বহু প্রতীক্ষিত, আশা-আকাঙ্খায় ও যাত্রীবাহী বাস, এম্ব্যুলেন্স, নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আনা-নেওয়াকারী ট্রাক, ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার, মাইক্রো বাস, মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল, অটো রিক্সাসহ সকল ধরনের পরিবহন নিয়ে ১ঘন্টা ২০মি: সময় নিয়ে বঙ্গপোসাগরের বুক চিড়ে সদ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌছে যাচ্ছে অবিরত। ২০জন স্টাফের সমন্বয়ে মাষ্টার সাইফুল ইসলামের তত্বাবধানে চলমান রয়েছে ফেরী কার্যক্রম।
তবে ফেরী “কপোতাক্ষ” বঙ্গপোসাগরে সদ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে কতদিন চলতে পারবে তা নিয়ে চলছে ব্যাপক যল্পনা-কল্পনা। তবে বিশেষজ্ঞ ও ফেরী কপোতাক্ষ সূত্রে জানা যায়, এই ফেরীটির বর্ষা মৌসুমে উত্তাল ঢেউয়ের বঙ্গপোসাগর (সদ্বীপ চ্যানেল) পাড়ি দেয়া অসম্ভব। এ উত্তাল ঢেউ সামাল দিতে সক্ষম একমাত্র কোস্টাল ফেরী, তবেই সারা বছর ফেরি চলাচল করতে পারবে এবং এর সুফল ভোগ করবে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ বাসী।
ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার পর যে সকল সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা সামনে আসছে –
* জোয়ার ভাটার সাথে সামাঞ্জস্য রেখে সর্বোচ্চ জোয়ারের বিষয়টি মাথায় রেখে (প্রয়োজনে) পল্টুন পুন: স্থাপন করা বাঞ্চনীয়।
* পল্টুনে গাড়ী উঠা নামার রাস্তাগুলো টেকসই করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। জোয়ারের পর ভাটা হলে পল্টুনের রাস্তাটি খুবই কদাযুক্ত হয়ে যায়। গাড়ী উঠা-নামায় বেশ বেগ পেতে হয়। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করতে হবে।
* ফেরিতে প্রচুর গাড়ি যাচ্ছে তাই এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা খুবই জরুরি। অগ্রধিকার / প্রায়োরিটি ঠিক করতে হবে কোন গাড়ি আগে যাবে কোনটা পরে যাবে। তবে এই ক্ষেত্রে রোগী পরিবহন (এম্বেুলেন্স), যাত্রীবাহি পরিবহন বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, এগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া এবং পন্যবাহি ট্রাক ও কাচামাল পরিবহনের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের জন্য ফেরীর সিডিউল নির্ধারণ করে দেয়া।
* ঘাটের শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দেয়া এবং ঘাটের উভয় প্রান্তে পরিবহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার কল্পে পুলিশ ক্যম্প বা নৌ-পুলিশ ক্যাম্প অথবা আসনার ক্যাম্পসহ আনসার নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করা এবং ফেরী ঘাটে অপেক্ষমান মহিলা ও শিশু যাত্রী ও পরিবহন শ্রমীকদের জন্য বিশ্রামের জায়গা ও গন শৌচাগার করা অত্যন্ত জরুরী।
* ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকে সন্দীপের প্রতি পর্যটকদের আগ্রহ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পর্যটকরা যাতে কোনভাবেই হয়রানির স্বীকার না হয় সেদিকে প্রশাসন সহ সন্দ্বীপ বাসী সবাইকে নজর দিতে হবে।
সর্বোপরি মাথায় রাখতে হবে এ রুটটি ফেরী সার্ভিসের জন্য একেবারে নতুন একটি রুট, এখানে নতুন নতুন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। এ জন্য ধৈর্য, বিচক্ষনতা ও দৃড়তার সাথে পদক্ষেপ নেয়া এবং এগুলোর সমাধানে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করা সকলের দায়িত্ব। তবেই সন্দ্বীপ বাসী, পর্যটক ও ফেরী কর্তৃপক্ষ সকলেই একে অপরের পরিপুরক হয়ে ভালো থাকবে।