০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন

 একজন ব্যক্তিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন দিতে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে চারুকলার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে,মূল মোটিফে আগুন দিয়েছেন মুখে কালো মাস্ক পরা একজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ শনিবার (১২ এপ্রিল) জানান,ওই ব্যক্তি কালো টি-শার্ট,বাদামি প্যান্ট ও কালো স্যান্ডেল পরেছিলেন।তার চুল পেছনে ঝুঁটি বাঁধা ছিল। ওই ব্যক্তি ভোর ৪টা ৪৪ মিনিটের ভেতরে ঢোকেন চারুকলার মাঝখানের গেট টপকে।তিনি ৪টা ৪৬ মিনিটে পালিয়ে যান একই পথে।তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।তিনি পুলিশকে জানান,সিসিটিভি ফুটেজে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ আরও বলেন,ওই ব্যক্তি প্রথমে তরল দাহ্য পদার্থ দিয়েছেন।তারপর পর্দার আড়ালে চলে গেছেন।তারপর ফুটেজে সেখানে অগ্নিশিখা দেখা গেছে।ওই ব্যক্তি যে গেট দিয়ে ঢুকেছে,সেই গেট দিয়েই বেরিয়ে ছবির হাটের দিকে গেছেন বলে তিনি জানান।তখন পুলিশ কী করছিল,তিনি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন,পুলিশকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে দেখা গেছে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার পর।সব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে পরে জানাবে তদন্ত কমিটি।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল জানান,ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে।ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে।একইসঙ্গে পুড়ে গেছে পায়রার অবয়বটাও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন,এটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল।আজকের মধ্যে এটির কাজ শেষ হয়ে যেত।এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র।আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কেউ ইচ্ছা করেই আগুন লাগিয়েছে।প্রশাসনের লোকজনও এর পেছনে জড়িত কি না খুঁজে বের করতে হবে। কারণ,রাতে এখানে উপস্থিত ছিল পুলিশের লোকজন।

(১২ এপ্রিল) শনিবার ভোরে আগুনে পুড়ে যায় নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি।এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে যায়।আংশিক পুড়ে যায় শান্তির পায়রা মোটিফটি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন,সেই ব্যক্তি কে,চেষ্টা চলছে তার পরিচয় জানার।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন,পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।সেখানে এ সময় পুলিশও ছিল।

এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ সকালে চারুকলা অনুষদ জানিয়েছে,নববর্ষের শোভাযাত্রা উপলক্ষে বানানো ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা।

শাহবাগ থানায় এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের।

তদন্ত কমিটি ৫ সদস্যের :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন।আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হক,আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল তুষার,চারুকলা অনুষদের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল প্রাং ও বিজ্ঞান অনুষদের সহকারী প্রক্টর এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

মহম্মদপুরে অলৌকিকভাবে প্রাণে বাঁচলো মাটি চাপা যুবক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন

পোস্ট হয়েছেঃ ০১:০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

 একজন ব্যক্তিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা দুটি মোটিফে আগুন দিতে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে চারুকলার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে।সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে,মূল মোটিফে আগুন দিয়েছেন মুখে কালো মাস্ক পরা একজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ শনিবার (১২ এপ্রিল) জানান,ওই ব্যক্তি কালো টি-শার্ট,বাদামি প্যান্ট ও কালো স্যান্ডেল পরেছিলেন।তার চুল পেছনে ঝুঁটি বাঁধা ছিল। ওই ব্যক্তি ভোর ৪টা ৪৪ মিনিটের ভেতরে ঢোকেন চারুকলার মাঝখানের গেট টপকে।তিনি ৪টা ৪৬ মিনিটে পালিয়ে যান একই পথে।তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।তিনি পুলিশকে জানান,সিসিটিভি ফুটেজে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ আরও বলেন,ওই ব্যক্তি প্রথমে তরল দাহ্য পদার্থ দিয়েছেন।তারপর পর্দার আড়ালে চলে গেছেন।তারপর ফুটেজে সেখানে অগ্নিশিখা দেখা গেছে।ওই ব্যক্তি যে গেট দিয়ে ঢুকেছে,সেই গেট দিয়েই বেরিয়ে ছবির হাটের দিকে গেছেন বলে তিনি জানান।তখন পুলিশ কী করছিল,তিনি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন,পুলিশকে পানি দিয়ে আগুন নেভাতে দেখা গেছে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার পর।সব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ বিষয়ে পরে জানাবে তদন্ত কমিটি।

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল জানান,ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে।ওই আকৃতি পুরোটাই পুড়ে গেছে।একইসঙ্গে পুড়ে গেছে পায়রার অবয়বটাও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন,এটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল।আজকের মধ্যে এটির কাজ শেষ হয়ে যেত।এটা নিঃসন্দেহে ষড়যন্ত্র।আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি কেউ ইচ্ছা করেই আগুন লাগিয়েছে।প্রশাসনের লোকজনও এর পেছনে জড়িত কি না খুঁজে বের করতে হবে। কারণ,রাতে এখানে উপস্থিত ছিল পুলিশের লোকজন।

(১২ এপ্রিল) শনিবার ভোরে আগুনে পুড়ে যায় নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য বানানো ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফ দুটি।এর মধ্যে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি মোটিফটি পুরোপুরি পুড়ে যায়।আংশিক পুড়ে যায় শান্তির পায়রা মোটিফটি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন,সেই ব্যক্তি কে,চেষ্টা চলছে তার পরিচয় জানার।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন,পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।সেখানে এ সময় পুলিশও ছিল।

এক বিজ্ঞপ্তিতে আজ সকালে চারুকলা অনুষদ জানিয়েছে,নববর্ষের শোভাযাত্রা উপলক্ষে বানানো ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতির মোটিফটি কে বা কারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা।

শাহবাগ থানায় এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের।

তদন্ত কমিটি ৫ সদস্যের :

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধানে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন।আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হক,আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল তুষার,চারুকলা অনুষদের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল প্রাং ও বিজ্ঞান অনুষদের সহকারী প্রক্টর এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী সদস্য হিসেবে রয়েছেন।