০২:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাতকানিয়ায় এনসিপি সংগঠকের উপর হামলা, অপহরণচেষ্টায় জনতার বাধা

  • A.U Masud
  • পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:১১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • 31

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় এনসিপি (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি)
সংগঠক তাওহীদুল ইসলাম মাসুমের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার
দুপুর ১টার দিকে উপজেলা প্রশাসন কতৃক বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত
বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার প্রধান ফটকের সামনে এ হামলার ঘটনা
ঘটে।
হামলার শিকার আহত মাসুম ও তার সঙ্গীরা জানিয়েছে তারা উপজেলা
প্রশাসন কতৃক বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে
বাড়ি ফিরছিলো, উপজেলার প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছালে ৭/৮ জন দুর্বৃত্ত
মাসুমের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কিল, ঘুষি ও লাথি দিয়ে মাসুমকে
আহত করে। হামলাকারীরা মাসুমকে টেনে হিঁচড়ে একটি গাড়িতে তুলতে
চেষ্টা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ সময় মাসুমের পরনের জামা
ছিড়ে যায় এবং হামলাকারিরা মাসুমের ব্যবহৃত ‘টিভিএস ফোর’
মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় জনতা প্রতিবাদ
করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এই হামলায় আরও আহত হন দক্ষিণ
জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক মো. জুবাইর, কাজী রাহাত ও
মানিক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং মাসুমকে অপহরণ
করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। স্থানীয়রা দ্রুত প্রতিক্রিয়া না দেখালে পরিস্থিতি
আরও খারাপ হতে পারতো বলে জানান তারা। আহতদের স্থানীয়ভাবে
চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং পরে মাসুমকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে এনসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, "এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
হামলা। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি
জানাচ্ছি।"
সাতকানিয়া থানার পুলিশ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তারা জানায়, "ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভুক্তভোগীর
পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।” সিসিটিভি ফুটেজ হামলাকারিদের
পরিচয় সনাক্ত করে সাতকানিযা উপজেলা সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা
অফিসার ক্যাপ্টেন পারভেজ হামলকারিদের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা
করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান যে হামলাকারিরা হলো ভোয়ালিয়া পাড়ার
রাকিব হোসেন তাসিন, সামির, রবিউল এবং সদর ইউনিয়ন বারদোনার
জাকের হোসাইন রাব্বি।
সাতকানিয়া এলাকায় বিগত কয়েক মাস ধরেই বিরোধী রাজনীতিকদের উপর
নজরদারি ও চাপের অভিযোগ রয়েছে। এনসিপি এবং অন্যান্য বিকল্প
রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের বাড়তে থাকা প্রভাব পুরনো প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর
মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে বলে স্থানীয় বিশ্লেষকদের অভিমত। এ হামলার
ঘটনা শুধুই একজন রাজনৈতিক কর্মীর ওপর সহিংসতা নয়—এটি একটি
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপরে হুমকিস্বরূপ। দিনের আলোয় জনসমক্ষে একজন
সংগঠকের ওপর হামলা এবং অপহরণের প্রচেষ্টা দেশের আইনের শাসন ও
রাজনৈতিক সহনশীলতার প্রশ্ন তোলে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত
ও কতটা কার্যকরভাবে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে
পারে।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

কুমিল্লা পাঠশালা কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দোয়া ও বিদায় অনুষ্ঠান

সাতকানিয়ায় এনসিপি সংগঠকের উপর হামলা, অপহরণচেষ্টায় জনতার বাধা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:১১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় এনসিপি (ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি)
সংগঠক তাওহীদুল ইসলাম মাসুমের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার
দুপুর ১টার দিকে উপজেলা প্রশাসন কতৃক বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত
বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার প্রধান ফটকের সামনে এ হামলার ঘটনা
ঘটে।
হামলার শিকার আহত মাসুম ও তার সঙ্গীরা জানিয়েছে তারা উপজেলা
প্রশাসন কতৃক বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে
বাড়ি ফিরছিলো, উপজেলার প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছালে ৭/৮ জন দুর্বৃত্ত
মাসুমের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে কিল, ঘুষি ও লাথি দিয়ে মাসুমকে
আহত করে। হামলাকারীরা মাসুমকে টেনে হিঁচড়ে একটি গাড়িতে তুলতে
চেষ্টা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এ সময় মাসুমের পরনের জামা
ছিড়ে যায় এবং হামলাকারিরা মাসুমের ব্যবহৃত ‘টিভিএস ফোর’
মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় জনতা প্রতিবাদ
করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এই হামলায় আরও আহত হন দক্ষিণ
জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক মো. জুবাইর, কাজী রাহাত ও
মানিক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং মাসুমকে অপহরণ
করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। স্থানীয়রা দ্রুত প্রতিক্রিয়া না দেখালে পরিস্থিতি
আরও খারাপ হতে পারতো বলে জানান তারা। আহতদের স্থানীয়ভাবে
চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং পরে মাসুমকে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে এনসিপি নেতৃবৃন্দ বলেন, "এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
হামলা। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি
জানাচ্ছি।"
সাতকানিয়া থানার পুলিশ ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তারা জানায়, "ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভুক্তভোগীর
পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।” সিসিটিভি ফুটেজ হামলাকারিদের
পরিচয় সনাক্ত করে সাতকানিযা উপজেলা সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা
অফিসার ক্যাপ্টেন পারভেজ হামলকারিদের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা
করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান যে হামলাকারিরা হলো ভোয়ালিয়া পাড়ার
রাকিব হোসেন তাসিন, সামির, রবিউল এবং সদর ইউনিয়ন বারদোনার
জাকের হোসাইন রাব্বি।
সাতকানিয়া এলাকায় বিগত কয়েক মাস ধরেই বিরোধী রাজনীতিকদের উপর
নজরদারি ও চাপের অভিযোগ রয়েছে। এনসিপি এবং অন্যান্য বিকল্প
রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের বাড়তে থাকা প্রভাব পুরনো প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর
মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে বলে স্থানীয় বিশ্লেষকদের অভিমত। এ হামলার
ঘটনা শুধুই একজন রাজনৈতিক কর্মীর ওপর সহিংসতা নয়—এটি একটি
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার ওপরে হুমকিস্বরূপ। দিনের আলোয় জনসমক্ষে একজন
সংগঠকের ওপর হামলা এবং অপহরণের প্রচেষ্টা দেশের আইনের শাসন ও
রাজনৈতিক সহনশীলতার প্রশ্ন তোলে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত
ও কতটা কার্যকরভাবে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে
পারে।