বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন ( বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বন্ধ পাটকলের উৎপাদন কার্যক্রম চালুসহ ৮দফা দাবিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বন্ধ ৫টি জুটমিলের কর্মহীন শ্রমিকরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমীক দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচী বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সকাল সাড়ে ১০ থেকে ১১ টা পর্যন্ত একযোগে উপজেলার পাঁচটি বন্ধ মিল গেটে যথাক্রমে- গালফ্রা হাবিব, আর.আর. জুট ও টেক্সটাইল মিলস্, এম.এম. জুট মিলস্, গুল আহমদ জুট মিলস্ ও হাফিজ জুট মিলস্ গেটে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিকদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, বন্ধ পাটকলের লিজ প্রথা বাতিল করা ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম চালু করা এবং ২০২০ সালে চাকরি অবসানে যাদের বয়স ৬০ বছর পূর্ণ হয়নি তাদের পুনঃ বহালসহ পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রদান করা, রাষ্ট্রায়ত্ত বন্ধ পাঁচটি পাটকলের শ্রমিকদের ২০১৫ সালের মজুরি কমিশনের আওতায় বকেয়াসহ সরকার ঘোষিত করোনাকালীন সাধারণ ছুটির পাওনা পরিশোধ করা, ২০২০ সালের ১ ও ২ জুলাইয়ের বকেয়া বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট, বোনাসসহ সব ভাতা পরিশোধ করা, বন্ধ পাটকলের যেসব স্থায়ী ও বদলি শ্রমিকদের নগদ পাওনা ও সঞ্চয়পত্র দেয়া হয়নি, তাঁদের পাওনা পরিশোধ করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি ও বেতন পরিশোধ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি, পিএফ বিমাসহ বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা, ২০১৫ সালের প্রদেয় মজুরি কমিশনে পিচরেট শ্রমিকদের গড় মজুরি ও টাইম রেট শ্রমিকদের আট ঘণ্টার অতিরিক্ত কাজের সব পাওনা পরিশোধ করা এবং যেসব শ্রমিক-কর্মচারী আদালতে মামলা করে রায় পেয়েছেন ও যাঁরা মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, তাঁদের সব পাওনা পরিশোধ করা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ন্যায় শ্রমিকদের বৈশাখী ভাতা প্রদান করা ও পাট শিল্পকে কৃষিভিত্তিক শিল্প হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে কৃষি শিল্পে প্রদেযয় সকল সুবিধা পাট শিল্পে প্রদান করা। গালফ্রা হাবিব লিমিটেডের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিবিএ’র সাবেক সভাপতি মো.জাফর ভূঁইয়া ও সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন উপস্থিত ছিলেন এবং  সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য মো.ইউসুফ নিজামী, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রগতি ইন্ডাস্ট্রি সিবিএ নেতা মো. নাসির, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন জামায়াতের আমির জয়নাল আবেদীন, জামায়াত নেতা নুরুন নবী, বিএনপি নেতা নুরুল আলম, পৌর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি শাহেদ খান, সাধারণ সম্পাদক মো.শিপন, পৌর মৎস্যজীবী দলের সভাপতি হান্নান জুলহাস, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ ভুট্টো, বিএনপি নেতা নুরুল আলম, পৌর যুবদল নেতা আবু সিদ্দিক বাল্লা, প্রগতির সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল শর্মা, হাবিব জুট লিমিটেড সিবিএ সহ-সভাপতি সেলিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক নুরুন্নবী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো.ইফতেখারসহ প্রমুখ। আর.আর. জুট ও টেক্সটাইলের সমাবেশে সিবিএ সভাপতি শ্রমিক নেতা মো. ছালামত উল্লাহ সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিবিএ নেতা নুর নবী, মোহাম্মদ উল্লাহ, আব্দুল মোমিন, বিএনপি নেতা মো. ইদ্রিস মেম্বার, মো. সেলিম, মো.  মনছুর, বদর উদ্দিন, দেলোয়ার, মুবাদ, কাসেম প্রমুখ। এম.এম. জুট মিলের সামনে সিবিএ সভাপতি নুর ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেল বিএনপির সদস্য সচিব কাজী মহিউদ্দিন, শ্রমিক  নেতা আবুল বশর, নুরুল ইসলাম, মো. শাহজাহান, আলমগীর মেম্বার, মো. হারুন ভূঁইয়া। গুল আহমদ জুট মিলের সামনে সিবিএ সভাপতি মো. লোকমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সিবিএ সেক্রেটারী মো. রফিক ও অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। হাফিজ জুট মিলের সামনে সিবিএ সভাপতি মো. কামাল উদ্দিদিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা মো. রবিউল হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য জহুরুল ইসলাম জহুর,  জেলা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. মোরছালিন সহ অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।  সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গালফ্রা হাবিব লিমিটেডসহ সারা বাংলাদেশে ২৫ টি পাটকল সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বন্ধ করে দেয় একই দিনে।  সেই সময় কারখানাগুলো বন্ধ করা হলেও পরিশোধ করা হয়নি শ্রমিকদের পাওনা। ফলে চাকুরিচ্যুত এসব শ্রমিকরা তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অবিলম্বে বন্ধ কারখানা চালু করা না হলে সীতাকুণ্ডের অভিভাবক বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বক্তারা।