০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনারগাঁয়ের অবৈধ চুন ও লোহা কারখানা গুঁড়িয়ে দিল এলাকাবাসী

নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি চুন ও লোহা তৈরির কারখানা ভেঙে দিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারখানাটি কোনো ধরনের বৈধ অনুমতি, পরিবেশ ছাড়পত্র কিংবা সরকারি লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। চুন পোড়ানো ও লোহা গলানোর কাজ চলাকালে ব্যাপকভাবে ধোঁয়া, রাসায়নিক গন্ধ ও ছাই ছড়িয়ে পড়ছিল, যার ফলে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে এবং স্থানীয় মানুষ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার মৌখিক এবং লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে তারা নিজেরাই সংগঠিত হয়ে শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে কারখানাটি গুঁড়িয়ে দেন। ঘটনার সময় কারখানার শ্রমিক ও মালিকপক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এলাকাবাসীর তৎপরতায় দ্রুতই কারখানার অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান স্থানীয়রা। পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই অবৈধ কারখানাটি বন্ধ করা। দীর্ঘদিন ধরে চুন পোড়ানো ও লোহা গলানোর কারণে শুধু পরিবেশ নয়, আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। দূষণের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, শিশু ও বয়স্কদের শ্বাস নিতে কষ্ট হতো। তবু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না পেয়ে মানুষ নিজেরাই উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়। আমি এলাকাবাসীর এই সচেতনতা ও সাহসী উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো অবৈধ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে গড়ে উঠতে না পারে। এ প্রসঙ্গে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরিবেশ ছাড়পত্র এবং প্রয়োজনীয় বৈধ অনুমতি ব্যতীত এ ধরনের শিল্প কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো অবৈধ কারখানা গড়ে ওঠার সুযোগ না হয়, সেজন্য প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি ও কঠোর নজরদারি বজায় রাখা হোক। তারা জানান, পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের সাহসী ভূমিকা নিতে আরও প্রস্তুত রয়েছেন তারা।
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নড়াইলে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু আহত দুই গৃহবধূ

সোনারগাঁয়ের অবৈধ চুন ও লোহা কারখানা গুঁড়িয়ে দিল এলাকাবাসী

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:৩৩:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি চুন ও লোহা তৈরির কারখানা ভেঙে দিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কারখানাটি কোনো ধরনের বৈধ অনুমতি, পরিবেশ ছাড়পত্র কিংবা সরকারি লাইসেন্স ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছিল। চুন পোড়ানো ও লোহা গলানোর কাজ চলাকালে ব্যাপকভাবে ধোঁয়া, রাসায়নিক গন্ধ ও ছাই ছড়িয়ে পড়ছিল, যার ফলে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ে এবং স্থানীয় মানুষ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার মৌখিক এবং লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে তারা নিজেরাই সংগঠিত হয়ে শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে কারখানাটি গুঁড়িয়ে দেন। ঘটনার সময় কারখানার শ্রমিক ও মালিকপক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এলাকাবাসীর তৎপরতায় দ্রুতই কারখানার অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়। ঘটনার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানান স্থানীয়রা। পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই অবৈধ কারখানাটি বন্ধ করা। দীর্ঘদিন ধরে চুন পোড়ানো ও লোহা গলানোর কারণে শুধু পরিবেশ নয়, আশপাশের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। দূষণের মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, শিশু ও বয়স্কদের শ্বাস নিতে কষ্ট হতো। তবু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না পেয়ে মানুষ নিজেরাই উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়। আমি এলাকাবাসীর এই সচেতনতা ও সাহসী উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে সাধুবাদ জানাই। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো অবৈধ শিল্পপ্রতিষ্ঠান এভাবে গড়ে উঠতে না পারে। এ প্রসঙ্গে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পরিবেশ ছাড়পত্র এবং প্রয়োজনীয় বৈধ অনুমতি ব্যতীত এ ধরনের শিল্প কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার পরিবেশ রক্ষা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো অবৈধ কারখানা গড়ে ওঠার সুযোগ না হয়, সেজন্য প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি ও কঠোর নজরদারি বজায় রাখা হোক। তারা জানান, পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের সাহসী ভূমিকা নিতে আরও প্রস্তুত রয়েছেন তারা।