০৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিস্তা প্রকল্পে লেবারদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) নজরুল রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন, কাজে ব্যাঘাত

নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তিস্তা নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজে কাজ চলমান রয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে জলঢাকা উপজেলার হলদিবাড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ ভাগাভাগি নিয়ে দুই লেবার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মেম্বার। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, লেবার সর্দার তসলিম উদ্দিন ওরফে চেরকাটা ও সহযোগী ঠিকাদার আশরাফ হোসেনের মধ্যে কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তসলিম উদ্দিন ও তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে নজরুল মেম্বারও হামলার শিকার হন। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার চোখের নিচে ১৩টি সেলাই দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা কাজ না করে স্থানীয় লেবার সর্দারদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়। এতে লেবারদের মধ্যে কর্তৃত্ব ও ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আহত নজরুল মেম্বারের বিষয়ে জলঢাকা থানার এসআই এমতাজুল ইসলাম বলেন, ওসি স্যার আমাকে ঘটনার বিষয়ে জানতে বললে আমি জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখতে পাই নজরুর মেম্বারকে চোখের নিচে সেলাই করতেছে। গোলমুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তফা রেজাউল করিম বলেন, “ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করছি। তবে যারা দোষী, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।” এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “তিস্তা তীরবর্তী জনপদকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন- এবার পানির চাপ বেশী থাকেবে, তাই বন্যা আসার আগেই বাঁধের কাজ শেষ করা প্রয়োজন। তবে এই ধরনের সংঘর্ষ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।” উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আওতায় হলদিবাড়ি এলাকায় পাঁচটি প্যাকেজে নদী তীর সংরক্ষণ কাজ চলছে। প্যাকেজগুলো হলো: ১. কেএম ৩২.৬০০ – ৩২.৮০০ (২০০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন (ঠাকুরগাঁও), ২. কেএম ৩২.৮২০ – ৩৩.০২০ (২০০ মিটার), ঠিকাদার: আল মামুন এন্টারপ্রাইজ (পটুয়াখালী), ৩. কেএম ৩৩.০২০ – ৩৩.২৫০ (২৩০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন, ৪. কেএম ৩৩.২৫০ – ৩৩.৪৭০ (২২০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন, ৫. কেএম ৩৩.৪৭০ – ৩৩.৭১০ (২৪০ মিটার), ঠিকাদার: মো. শামীমুর রহমান (সিরাজগঞ্জ) স্থানীয়রা প্রকল্পে সংঘর্ষের বিচার এবং কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

নড়াইলে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু আহত দুই গৃহবধূ

তিস্তা প্রকল্পে লেবারদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত জনপ্রতিনিধি (ইউপি সদস্য) নজরুল রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন, কাজে ব্যাঘাত

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন তিস্তা নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজে কাজ চলমান রয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে জলঢাকা উপজেলার হলদিবাড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ ভাগাভাগি নিয়ে দুই লেবার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মেম্বার। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, লেবার সর্দার তসলিম উদ্দিন ওরফে চেরকাটা ও সহযোগী ঠিকাদার আশরাফ হোসেনের মধ্যে কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তসলিম উদ্দিন ও তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে নজরুল মেম্বারও হামলার শিকার হন। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে তার চোখের নিচে ১৩টি সেলাই দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা কাজ না করে স্থানীয় লেবার সর্দারদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়। এতে লেবারদের মধ্যে কর্তৃত্ব ও ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আহত নজরুল মেম্বারের বিষয়ে জলঢাকা থানার এসআই এমতাজুল ইসলাম বলেন, ওসি স্যার আমাকে ঘটনার বিষয়ে জানতে বললে আমি জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখতে পাই নজরুর মেম্বারকে চোখের নিচে সেলাই করতেছে। গোলমুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তফা রেজাউল করিম বলেন, “ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করছি। তবে যারা দোষী, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।” এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “তিস্তা তীরবর্তী জনপদকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন- এবার পানির চাপ বেশী থাকেবে, তাই বন্যা আসার আগেই বাঁধের কাজ শেষ করা প্রয়োজন। তবে এই ধরনের সংঘর্ষ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।” উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আওতায় হলদিবাড়ি এলাকায় পাঁচটি প্যাকেজে নদী তীর সংরক্ষণ কাজ চলছে। প্যাকেজগুলো হলো: ১. কেএম ৩২.৬০০ – ৩২.৮০০ (২০০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন (ঠাকুরগাঁও), ২. কেএম ৩২.৮২০ – ৩৩.০২০ (২০০ মিটার), ঠিকাদার: আল মামুন এন্টারপ্রাইজ (পটুয়াখালী), ৩. কেএম ৩৩.০২০ – ৩৩.২৫০ (২৩০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন, ৪. কেএম ৩৩.২৫০ – ৩৩.৪৭০ (২২০ মিটার), ঠিকাদার: মো. জামাল হোসেন, ৫. কেএম ৩৩.৪৭০ – ৩৩.৭১০ (২৪০ মিটার), ঠিকাদার: মো. শামীমুর রহমান (সিরাজগঞ্জ) স্থানীয়রা প্রকল্পে সংঘর্ষের বিচার এবং কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।