০৩:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় লামিয়া

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া আর নেই।  ঢাকার শেখেরটেকের একটি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। রোববার (২৭ এপ্রিল) বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় লামিয়াকে। তার করুণ মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

গত বছরের জুলাই মাসে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিন হাওলাদার। বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জিয়ারত শেষে গত ১৮ মার্চ লামিয়া নানা বাড়ি ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
পরদিন তিনি নিজেই সাহসের সঙ্গে দুমকি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসায় গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লামিয়াকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার বিকেলে মরদেহ গ্রামের বাড়ি পাংগাশিয়ায় পৌঁছে। সন্ধ্যায় বাবার কবরের পাশে লামিয়াকে দাফন করা হয়। দাফনের সময় আত্মীয়স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ।

একদিন তো সবাইকেই কবরে যেতে হবে। নিজের ছেলের পরে এখন নাতনির কবরের কাজ করছি। কত বড় হতভাগা আমি! আমি আমার নাতনির ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি চাই।”
– কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন লামিয়ার দাদা সোবাহান হাওলাদার।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন,
“আসামিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্ট হাতে পেলেই পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

লামিয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন,
“যখন লামিয়ার উপর নির্যাতনের হুমকি আসছিল এবং সে বিচার চাইছিল, তখন যদি বিচার নিশ্চিত করা হতো, আজ হয়তো তাকে পৃথিবী ছেড়ে যেতে হতো না। বিচার বিলম্বিত হওয়ায় জাতির সামনে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”

এছাড়া সারজিস আলম বলেন,
“আমরা বাংলাদেশে আর কোনো বোনকে লামিয়ার মতো হারাতে চাই না। খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখতে চাই। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখতে চাই।”

 
ট্যাগঃ
প্রতিনিধির তথ্য

জনপ্রিয় পোস্ট

বাংলাদেশ থেকে ৩ পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত : বেনাপোল বন্দরে কোন ট্রাক আটকা নেই

বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় লামিয়া

পোস্ট হয়েছেঃ ০৫:২৬:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নের শহীদ জসিম উদ্দিন হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া আর নেই।  ঢাকার শেখেরটেকের একটি ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। রোববার (২৭ এপ্রিল) বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় লামিয়াকে। তার করুণ মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

গত বছরের জুলাই মাসে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিন হাওলাদার। বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জিয়ারত শেষে গত ১৮ মার্চ লামিয়া নানা বাড়ি ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
পরদিন তিনি নিজেই সাহসের সঙ্গে দুমকি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসায় গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লামিয়াকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার বিকেলে মরদেহ গ্রামের বাড়ি পাংগাশিয়ায় পৌঁছে। সন্ধ্যায় বাবার কবরের পাশে লামিয়াকে দাফন করা হয়। দাফনের সময় আত্মীয়স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ।

একদিন তো সবাইকেই কবরে যেতে হবে। নিজের ছেলের পরে এখন নাতনির কবরের কাজ করছি। কত বড় হতভাগা আমি! আমি আমার নাতনির ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি চাই।”
– কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন লামিয়ার দাদা সোবাহান হাওলাদার।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন,
“আসামিদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্ট হাতে পেলেই পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

লামিয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন,
“যখন লামিয়ার উপর নির্যাতনের হুমকি আসছিল এবং সে বিচার চাইছিল, তখন যদি বিচার নিশ্চিত করা হতো, আজ হয়তো তাকে পৃথিবী ছেড়ে যেতে হতো না। বিচার বিলম্বিত হওয়ায় জাতির সামনে বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।”

এছাড়া সারজিস আলম বলেন,
“আমরা বাংলাদেশে আর কোনো বোনকে লামিয়ার মতো হারাতে চাই না। খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখতে চাই। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে খুনিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখতে চাই।”