দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির পৃথক দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরই প্রতিবাদে নীলফামারী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।ডোমার পৌর বিএনপি’,ছাত্রদল,যুবদল,মহিলা দল, জাসাস,শ্রমিক দল ও উপজেলা বিএনপি পৃথক পৃথকভাবে তুহিনের মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। দুপুর থেকেই ডোমার শহরে তুহিনের মুক্তির দাবীতে খন্ড খন্ড মিছিল বের হয়।

পৌর জাসাসের যুগ্ন আহবায়ক মামুন উর রশিদ মামুন বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে আমাদের নেতা তুহিনকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি আজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। তিনি বলেন, ফ্যাসিষ্টের আমলে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা বাতিল করে অবিলম্বে তুহিন ভাইকে মুক্তি দিতে হবে।

সুত্র মতে, মঙ্গলবার ঢাকার পৃথক দুই বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। প্রথমে কর ফাঁকির মামলায় জামিন শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক কবির উদ্দিন প্রামাণিক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর কিছু সময় পর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ মামলাতেও তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভাগ্নে নীলফামারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন নীলফামারী জেলার উন্নয়নের রুপকার হিসাবে জেলাবাসীর কাছে পরিচিত। ৪ দলীয় জোট সরকারের সময় এ জেলায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করেন। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) মহাসচিব।  ১/১১ সময় সরকার প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে সে সময় কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে গুলশান থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দুটি মামলাতেই তাকে দন্ড দেওয়া হয়।  এর ফলে ২০০৭ সালে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাস জীবন কাটান তিনি। এ সময় তার স্ত্রী মারা গেলেও তিনি দেশে এসে দাফন কাফনে অংশ নিতে পারেন নি। জুলাই গন-অভ্যুথ্বানের পর ২২ শে এপ্রিল দেশে আসেন তিনি। রায় ঘোষণার দীর্ঘ ১৭ বছর পর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে তুহিনেন জামিনের না মঞ্জুরের খবরে উত্তাল হয়ে পরেছে নীলফামারীসহ তার নির্বাচনী এলাকা ডোমার ও ডিমলা। বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো জামিন না মঞ্জুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে অবিলম্বে শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের মুক্তির দাবী ও সাজা বাতিলের আহবান জানিয়েছেন।