
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরের পূজামণ্ডপে গত মঙ্গলবার রাতে বক্তব্য দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খানসহ দলের নেতা–কর্মীরা।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী যে অন্যায় কাজ করেছে, তার জন্য যদি ক্ষমা প্রার্থনা না করে, তাহলে আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় কোনো দিন তারা যেতে পারবে না। গতকাল মঙ্গলবার মহাষ্টমীতে রাত সাড়ে নয়টার দিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওই সময় টাঙ্গাইল-৮(সখীপুর-বাসাইল) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে কাদের সিদ্দিকীর বাঁ পাশের চেয়ারে বসেছিলেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী উপজেলার কেন্দ্রীয় মন্দিরের পূজামণ্ডপে যাওয়ার পাঁচ মিনিট আগে শফিকুল ইসলাম খান উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। পরে উভয় নেতা কুশল বিনিময় করেন। বক্তব্য দেওয়ার পর কাদের সিদ্দিকী নলুয়া পূজামণ্ডপে যান।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এই যে জামায়াতের লোকেরা আমার পাশে বসে আছে, এটাও আমার কাছে কিছু না। তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তারা যা করেছে, সেটা অন্যায় ছিল। আজকের সন্তানেরা সেই কাজের সঙ্গে ছিল না। বাংলাদেশে যাদের জন্ম, তারা জামায়াতে ইসলামের সন্তানই হোক, আর আওয়ামী লীগের সন্তানই হোক, আমার কাছে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু সেই সময়ে জামায়াতে ইসলামী যে কাজ করেছে, তার জন্য যদি ক্ষমা প্রার্থনা না করে এবং সেই রকম ক্ষমা প্রার্থনা, যে রকম ক্ষমা মহান আল্লাহ পাক গ্রহণ করেন। সেই রকম ক্ষমা প্রার্থনা না করলে যত হাজার আর লাখই লোক হোক, দেশের শাসনক্ষমতায় কোনো দিন জামায়াতে ইসলামী যেতে পারবে না, এটা আমার বিশ্বাস।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘যে দেশে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে এখনো দেশটা পাকিস্তানের চাকর থাকত। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী যদি আমার দেশের বাড়িঘর না পুড়ত, আমার মা-বোনদের সম্মান নষ্ট না করত, তাহলে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হওয়া সহজ হতো না। কারণ, আমাদের হাতে যে অস্ত্র ছিল, তার চেয়ে হাজার গুণ শক্তিশালী অস্ত্র ছিল পাকিস্তানিদের হাতে। কিন্তু অস্ত্র কোনো শক্তি না, আল্লাহ রাজি-খুশি না থাকলে পৃথিবীতে কেউ কিছু করতে পারে না।’
গত মঙ্গলবার বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সন্ধ্যায় প্রথমে উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নের আলিশার বাজারের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান। এরপর মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার দুর্গাপুর, মহানন্দপুর, বড়চওনা, উপজেলা কেন্দ্রীয় মন্দির, নলুয়া ও হাতীবান্ধা পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন।
এ সময় উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুস সবুর খান, সাধারণ সম্পাদক সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহসহ অর্ধশত নেতা–কর্মী তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন।